সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোটসঙ্গীদের নিয়ে ফের সরকার গড়বে বিজেপি। টানা তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর এই জয়লাভের পর থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা। সেই তালিকায় রয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। পাশাপাশি সীমান্ত সংঘাতের আবহেও মোদির সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছে চিন। বার্তা দেওয়া হয়েছে একসঙ্গে কাজ করার।
প্রায় দেড় মাস ধরে চলা অষ্টাদশ লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশ হয়েছে ৪ জুন। ভারতের এই নির্বাচনের উপর নজর ছিল বিভিন্ন দেশের। নজর রেখেছিল চিনও। দেশের রায় ঘোষণা হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছে বেজিং। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, "নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা। ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চিন তৈরি। দুদেশের সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নতি হোক আমরা এটাই চাই। আগামিদিনে দুদেশের স্বার্থ ও নাগরিকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্য পূরণে আমাদের নজর থাকবে।"
[আরও পড়ুন: মোদির অজেয় ভাবমূর্তিতে চিড়! লোকসভার ফল নিয়ে কী বলছে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলি]
বলে রাখা ভালো, গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ভারত-চিন সম্পর্ক। বারবার লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেজিং। যা নিয়ে বিরোধ বেড়েছে দিল্লির সঙ্গে। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা নিয়ে পড়শি দেশকে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিদায়ী প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কয়েক দফা আলোচনায় বসেছে দুই দেশের সেনাবাহিনীও। ফলে মোদি ফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আগামিদিনে দুদেশের সম্পর্ক কোন রূপ নেয় সেদিকেই নজর থাকবে কূটনৈতিক মহলের।
অন্যদিকে, এখন রাশিয়ার সঙ্গে তীব্র লড়াই করছে ইউক্রেন। রুশ ফৌজের আক্রমণের মোকাবিলা করতে প্রতিনিয়ত বৈঠক করে যাচ্ছেন জেলেনস্কি। কিন্তু এই সময়ও মোদিকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি তিনি। আন্তর্জাতিক বিষয়ে মোদির তুলে ধরে বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে জেলেনস্কি লেখেন, 'ভারতের সফল নির্বাচনকে আমি স্বাগত জানাই। এই ভোটে জয়লাভ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনেক শুভেচ্ছা। আমি ভারতীয়দের শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করি। আশা করছি আগামিদিনে ভারত-ইউক্রেনের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। তৃতীয়বারের জন্যও এই সহযোগিতা বজায় থাকবে। গোটা বিশ্ব জানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভারতের গুরুত্ব কতখানি। সমস্ত দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে আমরা একযোগে কাজ করতে চাই। আমরা চাই শান্তি বৈঠকে ভারত যোগ দিক।"
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সুসম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। মোদির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গভীর বন্ধুত্বের কথাও তিনি জানেন। তাই দুবছর ধরে চলা এই যুদ্ধ থামাতে মোদির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাই শুভেচ্ছাবার্তায় ঘুরিয়ে মনে করালেন জেলেনস্কি। পাশাপাশি সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে চলা শান্তি বৈঠকে যোগ দিয়ে রাশিয়াকে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিক ভারত, এটাই চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, যুদ্ধ আবহে পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন মোদি। দুজনকেই বৈঠক ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার বার্তা দিয়েছেন তিনি।