সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেজিং রয়েছে বেজিংয়েই। চিনে (China) মতপ্রকাশের অধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা যে কতটা বিপন্ন তা যেন আরও একবার পরিষ্কার হয়ে গেল বিশ্বের কাছে। গত শুক্রবারই গালওয়ান (Galwan) সংঘর্ষে চিনা সেনার মৃত্যু হওয়ার কথা প্রথমবার ঘোষণা করেছে জিন পিং প্রশাসন। কিন্তু সরকারি হিসেবকে সন্দেহ করায় লালফৌজকে ‘অপমানে’র অভিযোগে এখনও পর্যন্ত তিনজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাঁদের অন্যতম কিউ জিমিং নামের এক সাংবাদিক। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছিলেন, চিন যে বলছে মাত্র চারজন চিনা সেনা মারা গিয়েছেন তা ঠিক নয়। তাঁর ধারণা, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, সংঘর্ষে যে চিনা সেনাদেরও মৃত্যু হয়েছে তা মেনে নিতে আট মাস লাগল কেন। টুইটারের চিনা সংস্করণ ওয়েইবোতে তিনি এই নিয়ে একটি পোস্ট করতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে। একই অভিযোগে পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও দু’জনকে।
[আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে বুটের আওয়াজ! মায়ানমারে গণবিক্ষোভ আটকাতে নয়া পন্থা সেনার]
এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে সাম্প্রতিক আরেক ঘটনা। চিনের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করায় এক চিনা ব্লগারের গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনাকে। এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযুক্তর দশ বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজা হতে পারে। চিনে ব্যক্তিস্বাধীনতা বিপন্ন এমন অভিযোগ অবশ্য আজকের নয়। এই নিয়ে গোটা বিশ্বেই সমালোচিত চিন। তবুও তাতে যে তাদের যে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই তা এই ধরনের নিত্যনতুন ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার হাতে নিকেশ লালফৌজের চার সৈনিকের নাম প্রকাশ করেছে চিন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাশিয়ার তরফ থেকে লাগাতার চাপের মুখেই তাদের মৃত জওয়ানদের নাম ও সংঘর্ষের ভিডিও প্রকাশ করতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছে চিন। রাশিয়া অনেক দিন আগেই দাবি করেছে, গালওয়ানের রক্তাক্ত সংঘর্ষে লালফৌজের অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন গোপন রিপোর্টেও উঠে এসেছে চিনা ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ। কিন্তু এনিয়ে এতদিন কোনও মন্তব্য করেনি চিন। এমনকী, ওই সংঘর্ষে তাদের কোনও সেনার মৃত্যু নিয়েও নীরব ছিল তারা।