সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ফের রাষ্ট্রসংঘে (UN) ভারতের বিরোধিতা করল চিন। হাফিজ সইদের ছেলে তালহাকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে ভারতের প্রস্তাব নাকচ করে দিল চিন। বেজিংয়ের এহেন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করলেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ভারত সফরে এসে তিনি বললেন, আঞ্চলিক ভেদাভেদের ফলেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভুমিকা নিতে পারছে না রাষ্ট্রসংঘ। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই লস্কর জঙ্গিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল চিন। গত কয়েকমাসে এই নিয়ে পাঁচবার এহেন পদক্ষেপ নেওয়া হল চিনের তরফে।
লস্কর-ই-তইবা প্রধান হাফিজ সইদের ছেলে তালহাকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে রাষ্ট্রসংঘে প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। সেই প্রস্তাবে ভারতের সঙ্গী ছিল আমেরিকাও। কিন্তু সেখানে ভেটো দিয়ে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেয় চিন। প্রসঙ্গত, লস্কর-ই-তইবার (LeT) অন্যতম নেতা শাহিদ মাহমুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করতে চেয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যৌথ প্রস্তাব দিয়েছিল আমেরিকা ও ভারত। আল কায়দাকে নিষিদ্ধ করার আইনের আওতাতেই শাহিদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয়েছিল ভারত (India) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA)। কিন্তু সেই প্রস্তাবে বাধা দিয়েছিল বেজিং। টানা দু’দিন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রকাশ্যেই ভারতের বিরোধিতা করল চিন।
[আরও পড়ুন: মৃতদেহ খুবলে খাচ্ছে হায়না, গৃহযুদ্ধে ইথিওপিয়া যেন নরক!]
এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতা সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই গুতেরেস বলেন, “স্থানীয় পরিস্থিতির কারণে নানা দেশের মধ্যে বিভেদ রয়েছে। দেশগুলির মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক সমীকরণ রয়েছে, তার জন্যই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারছি না।” প্রসঙ্গত, আগেও বহুবার রাষ্ট্রসংঘে পাক জঙ্গিদের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে চিন। চলতি বছরের জুন মাস থেকে এই নিয়ে পাঁচবার সন্ত্রাস সংক্রান্ত ভারতের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে চিন।
তবে বেজিং-এর এই ভূমিকায় বারবার সমালোচনা করেছে ভারত। চলতি বছরের ব্রিকস সম্মেলনেও নাম না করে চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সারা পৃথিবীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে একযোগে লড়াই করতে হবে। দেশের সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে হবে। তবে মোদির এই আহ্বানে চিন যে সাড়া দেয়নি, সেটা রাষ্ট্রসংঘে তাদের আচরণেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।