সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেজিংয়ে জাপানের দূতাবাসে ইট ছোঁড়ার অভিযোগ উঠল চিনের নাগরিকদের বিরুদ্ধে। ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র থেকে সমুদ্রে ‘বিষাক্ত’ জল ছাড়ার কারণে জাপানের উপর রেগে লাল চিন। এ নিয়ে সেদেশে বসবাসকারী জাপানিদের উদ্দেশে আগেই সতর্কবার্তা জারি করেছিল টোকিও।
জানা গিয়েছে, বেজিংয়ে জাপানের দূতাবাসে ইট ছোঁড়ার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী ইয়োসিমাসা হায়াশি। তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ করতে বলেছেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন, তিনি যেন চিনকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
মঙ্গলবার চিনকে তোপ দেগে হায়াশি বলেন, “এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক ও উদ্বেগের। আমরা চিনের প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি, এই বিষয় তারা যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। চিনা নাগরিকদের যেন শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেজিংয়ের উচিৎ তাদের নাগরিকদের সঠিক তথ্য দেওয়া। ফুকুশিমার জল ছাড়ার ব্যাপারে আগেই তাদের জানানো হয়েছিল। ফলে চিনাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই।”
[আরও পড়ুন: প্রথম মহিলা প্রধান পাচ্ছে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাই কমিশন]
প্রসঙ্গত, চিনে বসবাসকারী নাগরিকদের উপর হামলার আশঙ্কা আগেই করেছিল জাপান (Japan)। গত শুক্রবার প্রবাসীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা জারি করে টোকিও। বলা হয়, ‘জনসমক্ষে জাপানিতে ফিসফিস করে কথা বলবেন। সতর্ক থাকবেন। অযথা ঝামেলায় জড়াবেন না।’এবার সেই আশঙ্কা সত্যি করে হামলা করা হল জাপানের দূতাবাসে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে জাপানের পূর্ব উপকূলে আঘাত হানে সুনামি। দানবীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমা আণবিক কেন্দ্র। তেজস্ক্রিয় বিকিরণের আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে দেশটি। তারপরই ফুকুশিমার ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আসলে ভয়াবহ সুনামি ও ভূমিকম্পের ধাক্কায় প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিগুলিকে ঠান্ডা করতেই ১০ লক্ষ মেট্রিক টন জল ব্যবহার করবে জাপান। গত মাসে সেই জল সমুদ্রে ফেলার অনুমতি দেয় ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (IAEA)। ফলে তেজস্ক্রিয় সেই জল মিশবে সমুদ্রে।
টোকিও অবশ্য দাবি করছে, ওই জল নিরাপদ। রেডিও অ্যাক্টিভ আইসোটোপগুলিকে সরাতে জল ফিল্টার করেই ছাড়া হবে। গত বৃহস্পতিবার প্রশান্ত মহাসাগরে ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের ‘বিষাক্ত’জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জাপান। এর জেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিবেশপ্রেমীরা। রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াতেও। ভয়ে ভয়ে রয়েছেন সমুদ্র উপকূলের মৎস্যজীবী ও দোকানদাররা।