সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাসুদ আজহার নিয়ে কি ভিতরে ভিতরে অবস্থান বদলাচ্ছে চিন? আন্তর্জাতিক চাপের কাছে কোণঠাসা হয়েই কি নতি স্বীকার বেজিংয়ের? কারণ মাসুদ আজহার ইস্যুতে আপাতত চিন যে নিরাপত্তা পরিষদে ‘একঘরে‘ সেটা নিয়ে দ্বিমত নেই। এই অবস্থায় সোমবার চিনা বিদেশমন্ত্রকের ঘোষণা নতুন করে তাদের ‘অবস্থান বদলের’ জল্পনা উসকে দিল।
এদিন চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জেং শুয়াং এক লম্বা চওড়া বিবৃতিতে বলেছেন, “নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ নম্বর আল কায়দা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মাসুদকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ তকমা দিতে এই প্রস্তাব যাতে পাশ হয় সে ব্যাপারে বেশ কিছু ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’ হয়েছে।”
[আরও পড়ুন-সীমান্তে পাক সেনার গুলি-মর্টার হামলা, প্রাণ হারাল ৫ বছরের শিশু]
কিন্তু ঠিক কী কী ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে সে ব্যাপারে ভেঙে কিছু জানাননি চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, “চিন নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪টি সদস্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছে। ওই দেশগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমেরিকাও জানে ঠিক কী কথা হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই অগ্রগতি শীঘ্রই মাসুদ ইস্যুতে ঐকমত্য তৈরি করবে।”
[আরও পড়ুন-ফেক অ্যাকাউন্টে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক! কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত বহু পেজ বন্ধ করল ফেসবুক]
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে চিনা মুখপাত্র জানান, অস্বস্তি ও মতপার্থক্য এড়াতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওয়ান ইজ টু ওয়ানে কথা বলেছেন চিনা প্রতিনিধিরা। এ ব্যাপারে কি কথা হয়েছে বা কী অগ্রগতি হয়েছে তা মার্কিন ও ফরাসি প্রতিনিধিরা সবই জানেন।
[আরও পড়ুন-‘ভোটবাক্স ভরাতে পারলে উপহার বাইক-স্মার্টফোন’, তৃণমূল নেতার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক]
তিনি এদিন আমেরিকার প্রচেষ্টার ফের একবার নিন্দা করে বলেন, আমেরিকা ১২৬৭ নম্বর কমিটির কাছে মাসুদের বিরুদ্ধে গা জোয়ারি করে প্রস্তাব এনেছে। আমেরিকার এই প্রচেষ্টা নেতিবাচক এবং খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। অথচ নিরাপত্তা পরিষদের সব দেশই বলছে, ১২৬৭ নম্বর কমিটির কাজের এক্তিয়ার ও পরিকাঠামোর মধ্যেই মাসুদ ইস্যুটি নিয়ে আগে আলোচনা হওয়া দরকার। আলোচনার ভিত্তিতেই এ ব্যাপারে ঐকমত্যে আসা যেতে পারে। কিন্তু আগেভাগেই আমেরিকা এ নিয়ে একতরফা প্রস্তাব পেশ করল। তারপর আমেরিকা চাপ দিচ্ছে যাতে নিরাপত্তা পরিষদ ১২৬৭ নম্বর কমিটিকে পাশ কাটিয়ে প্রস্তাবটি পাশ করে দেয়। কিন্তু, তাহলে ওই কমিটি রাখার যুক্তি কী? আমেরিকার এই উদ্যোগ কিন্তু বিষয়টিকে আরও জটিল করেছে।
জেং শুয়াং বলেছেন, এ ব্যাপারে ভারত-সহ অন্য দেশগুলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে চিনা প্রতিনিধি সব দেশের সঙ্গেই কথা বলেছেন। আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে ঐকমত্যের দিকে। আশা করা যায় শীঘ্রই মাসুদ আজহার ইস্যুতে জট খুলবে।