সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল্পনায় ইতি টেনে অবশেষে আফগানিস্তানে সরকার গঠন করল তালিবান (Taliban)। তবে তা যে আদৌ দোহা চুক্তি মেনে ‘সব পক্ষ’কে নিয়ে তৈরি হয়নি এটা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে তালিবান মন্ত্রিসভা ঘোষিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই মুখ খুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর মন্তব্য, “তালিবানের সঙ্গে সত্যি সমস্যা রয়েছে চিনের।”
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তান নিয়ে জেরবার আমেরিকাকে ধাক্কা, ফের তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকল চিনা যুদ্ধবিমান]
পঞ্জশির দখল এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর পর মঙ্গলবার রাতে ক্যাবিনেটের সদস্যদের নাম ঘোষণা করে তালিবান (Taliban)। আফগানভূমের তালিবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছে মহম্মদ হাসান আখুন্দ। ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী পদে বসছে মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর। তবে সে একা নয়, দ্বিতীয় ডেপুটি হচ্ছে মৌলবি হানাফি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছে ‘হাক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানি। আখুন্দ শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, তালিবানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী রেভারি শুরার (ধর্মীয় সভা) প্রধান। তালিবান সুপ্রিমো হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা ঘনিষ্ঠ মহম্মদ হাসান আখুন্দ বরাবরই পাকপন্থী। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তার নাম প্রস্তাব করেছে খোদ আখুন্দজাদাই। আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে মহম্মদ আখুন্দ (Hasan Akhund) বসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এদিকে, তালিব মন্ত্রিসভা ঘোষিত হওয়ার পরই বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তৎপরতা। শুরুর দিকে আমেরিকার ‘হার’ নিয়ে চওড়া হাসি হাসলেও জেহাদি সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে কিছুটা দোনামোনা করছে চিন ও পাকিস্তান। তালিবান-১.০ অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির অরাজকতার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমের দেশগুলিও তাদের বিশ্বাস করতে নারাজ। এহেন সময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, “তালিবানের সঙ্গে চিনের সত্যিকারের সমস্যা রয়েছে। সেই সব সমস্যা মিটিয়ে নিতে তারা কিছুটা চেষ্টা করছে। আমি মনে করি ইরান, পাকিস্তান ও রাশিয়ার সমস্যা রয়েছে।” বিশ্লেষকদের মতে, চিনের উইঘুর জঙ্গিদের মদত দিতে পারে তালিবান। একইভাবে রাশিয়ার চেচেন জঙ্গি ও ইরানের সুন্নি সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেবে তালিবরা। সেই কথাই ইঙ্গিতে স্পষ্ট করলেন বাইডেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখল করে তালিবান। নতুন করে শুরু হয় অন্ধকার যুগের। তারপর থেকেই আশঙ্কিত গোটা বিশ্ব। তালিবানি তাণ্ডবের (Taliban Terror) বীভৎস চেহারা সারা বিশ্বকে দেখতে হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে রাস্তায় উন্মত্তের মতো ছুটেছে সাধারণ মানুষ। বিশিষ্টরাও বাদ যাননি। তালিবানরা দেশ দখল করে নেওয়া পর প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন জাতীয় দলের এক ফুটবলার। কিন্তু প্লেন থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় নেট নাগরিকরা শিহরিত। এখনও ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’র রুক্ষ মাটিতে রক্তের দাগ।