সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অরুণাচল প্রদেশকে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চিন। সেখানে ভারতীয় রাজনীতিকদের, বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামার সফর নিয়ে ভারতের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের কথাও সকলের জানা। এবার তাতে নতুন মাত্রা যোগ হল। অরুণাচল প্রদেশ ও তাইওয়ানকে চিনের অন্তর্গত ভূখণ্ড হিসাবে না দেখানোয় চিনা শুল্ক দপ্তরের কর্তারা সে দেশে ছাপানো ৩০ হাজার ‘বিশ্ব মানচিত্র’ পুড়িয়ে ফেলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
[ আরও পড়ুন: ৩০ বছরেই জলশূন্য হবে ব্রিটেন! উষ্ণায়ন নিয়ে সতর্কবার্তা ব্রিটিশ গবেষকদের]
চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টাইমস-এর খবর, ওই মানচিত্রগুলি অন্য একটি দেশে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। যদিও সেই দেশের নাম প্রতিবেদনে জানানো হয়নি। গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, কুইংডাওয়ের শুল্ক কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩০ হাজার ‘ভুল’ মানচিত্র নষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, সেগুলিতে তাইওয়ানকে পৃথক দেশ হিসাবে দেখানো হয়েছে, যা তাঁদের চোখে ঠিক নয়৷ তাছাড়া ভারত-চিন সীমান্তেরও ভুল ছবি রয়েছে। অরুণাচলকে দেখানো হয়েছে ভারতের অংশ হিসাবে।
অরুণাচলকে শুধুমাত্র নিজের এলাকা বলে দাবি করেই বেজিং চুপ থাকে না। সেখানে ভারতীয় নেতা-মন্ত্রীদের সফর হলেই নিয়ম করে তার তীব্র প্রতিবাদও জানায় চিন। তাদের অভিমত, ভারত অরুণাচলের দাবিদার হলেও সেটি আসলে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। অন্যদিকে নয়াদিল্লির সাফ কথা, অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভারতীয় নেতা-মন্ত্রীরা দেশের অন্য সব রাজ্যের মতোই নিজেদের ভূখণ্ডে ইচ্ছামতো সফর করবেন। অন্য কোনও দেশের তাতে কিছু বলার থাকতে পারে না। ৩৪৮৮ কিমি দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে সীমান্ত বিতর্ক নিরসনে ভারত ও চিনের ২১ দফা আলোচনার পরও রফাসূত্র বেরোয়নি।
আবার অরুণাচল প্রদেশের মতোই তাইওয়ানকে চিন নিজের ভূখণ্ড হিসাবে দাবি করে। এ ব্যাপারে চিনের বৈদেশিক বিষয় সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইন বিভাগের অধ্যাপক লিউ ওয়েংজংয়ের বক্তব্য, চিন ওই মানচিত্রের ব্যাপারে যা করেছে, সেটা অবশ্যই আইনসম্মত ও জরুরি ব্যবস্থা। কারণ, একটি দেশের কাছে সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাইওয়ান ও দক্ষিণ তিব্বত, দু’টিই চিনের নিজের ভূখণ্ড। তাকে অন্য দেশের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা অমার্জনীয় অপরাধ। শুল্ক আধিকারিকরা মানচিত্র নষ্ট করে ঠিকই করেছেন।
[ আরও পড়ুন: হংকংয়ে স্নোডেনকে আশ্রয় দিয়ে মার্কিন রোষে মহিলা, ঠাঁই পেলেন কানাডায়]