সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুসলমানদের মধ্যে ‘সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ দৃঢ় করতে এবার নতুন করে কোরান লিখতে চলেছে চিন। শুনতে অবাক লাগলেও, বেজিংয়ের সাফ কথা, সমস্ত ইসলামিক গ্রন্থের পুনর্মূল্যায়ণের সময় এসেছে।
কম্যুনিস্ট পার্টির এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, নয়া কোরানে এমন কোনও কথা লেখা থাকবে না যা দেশ ও দলের মতবাদের পরিপন্থী। বর্তমানের ইসলামিক ধর্মগ্রন্থটি থেকে ‘মৌলবাদে উসকানি’ দেয় এমন সমস্ত পরিচ্ছদ বাদ দেওয়া হবে। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসেই এই সিদ্ধান্ত নেয় ‘জনজাতি ও ধর্ম বিষয়ক কমিটি’। বিভিন্ন ধর্মের ১৬ জন প্রতিনিধি কমিটির বৈঠকে যোগ দেন। কমিটির প্রধান ওয়াং ইয়াংয়ের বক্তব্য, “সমাজতন্ত্রের মূল্যবোধ মেনে চলতে হবে ধর্মগুরুদের। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশ মোতাবেক, সমাজতন্ত্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ধর্মীয় বিষয়গুলির ব্যাখ্যা করতে হবে তাঁদের। চিনা ভাবধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে ধার্মিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।”
[আরও পড়ুন: উইঘুর মুসলিমদের সমর্থন, চিন প্রশাসনের রোষের মুখে ওজিল]
এদিকে, শুধু কোরান নয়, বাইবেলেরও নয়া সংস্করণ তৈরি করতে চলেছে চিন। সব মিলিয়ে সংখ্যালঘুদের ধার্ম ও আচারে কড়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামিক সন্ত্রাসে অশান্ত জিনজিয়াং প্রদেশ নিয়ে উদ্বেগে ভুগছে বেজিং। ফলে সমস্ত মসজিদ ও ধার্মিক অনুষ্ঠানে কড়া নজর রেখেছে সে দেশের প্রশাসন। উল্লেখ্য, উইঘুর মুসলিমদের প্রতি চিনা প্রশাসনের নীতি বিশ্বের অজানা নয়। ‘শুদ্ধিকরণের’ নামে জিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুরকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ বা বন্দি শিবিরে রাখা হয়েছে। এবার কর্মসংস্থানের নামে তাঁদের দিয়ে রীতিমতো বেগার খাটাচ্ছে প্রশাসন। আর গোটা পরিস্থিতি জেনেও মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে মুসলিম দেশগুলি।
গবেষক এড্রিয়ান জেনজ দাবি করেছেন, ২০১৮ সালের শেষের দিক থেকেই বন্দি শিবিরগুলি থেকে উইঘুরদের বিভিন্ন কারখানা মজুর হিসেবে কাজ করার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে রীতিমতো কড়া নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ রাখা শুরু করেছে প্রশাসন। কমিউনিজমের পাঠ দেওয়ার নামে উইঘুর সংস্কৃতি ও ধর্মকে মুছে ফেলতে চাইছে লালচিন।
The post সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধে জোর, মুসলিমদের জন্য নয়া কোরান লিখবে চিন appeared first on Sangbad Pratidin.