সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের (China) বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নতুন নয়। সে উইঘুর মুসলমানদের নির্যাতনই হোক কিংবা সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ- বেজিংয়ের বিরুদ্ধে বারবারই মানবাধিকার কর্মীরা সরব হয়েছেন। সেদেশের ইউহান শহরে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। ৩৮ বছরের এক সাংবাদিককে কোভিড (COVID-19) সংক্রমণ নিয়ে সরব হওয়ার ‘অপরাধে’ জেলবন্দি করা হয়েছিল। চার বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল। এবার জানা গেল, জেলে মৃত্যুর মুখে সেই মহিলা। প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তিনি।
সেই সাংবাদিকের নাম ঝ্যাং ঝান। ৩৮ বছরের মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন চিনে করোনার দাপাদাপি চরমে তখন তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন কর্তৃপক্ষকে। নিজের স্মার্টফোনে ভিডিও তুলে সকলের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন কীভাবে সংক্রমণের ধাক্কা সামলাতে ব্যর্থ প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: অরুণাচলে ঢুকে আস্ত একটা গ্রাম বানিয়ে ফেলেছে চিন, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রিপোর্টে চাঞ্চল্য]
স্বাভাবিক ভাবেই এরপর প্রশাসনের রক্তচক্ষু গিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। গত বছরের মে মাসে তাঁকে আটক করা হয়। পরে ডিসেম্বর মাসে আদালত তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
বর্তমানে মৃত্যুর মুখে সেই সাংবাদিক। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন ওই আইনজীবী আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আমরণ অনশন শুরু করে দিয়েছেন। আর সেই কারণেই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। পরে জেল কর্তৃপক্ষ জোর করে তাঁর নাকে পাইপ ঢুকিয়ে খাওয়ালেও শরীর ভেঙে পড়েছে তাঁর। পরিস্থিতি এমনই, নিজে নিজে হাঁটাচলা তো দূরে থাক হাত তুলতেও পারছেন না ঝ্যাং ঝান। তাঁর ভাই ঝ্যাং জু জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে এই শীতের কামড় সহ্য করে তাঁর দিদির পক্ষে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন হতে চলেছে। টুইটারে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, সম্ভবত তাঁর দিদি আর বেশিদিন বাঁচবেন না।
খবর জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক আঙিনায়। ঝ্যাং জু আরজি জানিয়েছেন, তাঁর দিদিকে যেন দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর সাফ কথা, শাস্তি দেওয়া তো দূরে থাক আটক করার মতো কাজ ঝ্যাং ঝান করেননি। তিনি যা করেছেন, তা একজন সৎ সাংবাদিকের করারই কথা। যদিও চিনের প্রশাসন এখনও পর্যন্ত আরজিতে সাড়া দেওয়ার কোনও লক্ষণই দেখায়নি। ওই সাংবাদিকের পরিবারের এক ঘনিষ্ঠের দাবি, তাঁর সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হচ্ছে না পরিবারের সদস্যদের।