সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন শীর্ষকর্তার তাইওয়ান সফরের মাঝেই শক্তি প্রদর্শন চিনের। সোমবার স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্রটির বায়ুসীমা ঘেষে উড়ে যায় চিনের দু’টি যুদ্ধবিমান। মার্কিন স্বাস্থ্যসচিব অ্যালেক্স আজারের তাইওয়ান সফরকালে চিনের এই সামরিক তৎপরতা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, মঙ্গলবার আজারের কাছে তাইপেইর শীর্ষ অধিকারিকরা অভিযোগ করেন যে, তাইওয়ানকে দ্বিতীয় হংকং বানাতে চাইছে চিন। এর জন্য রীতিমতো চাপ বাড়িয়ে তুলছে বেজিং।
[আরও পড়ুন: বেইরুটে বিস্ফোরণের পরেই উত্তাল লেবানন, গণআন্দোলনের চাপে ইস্তফা গোটা মন্ত্রিসভার]
রবিবার তাইওয়ানে পৌঁছে সোমবার দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অ্যালেক্স আজার। অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তাইওয়ানের (Taiwan) সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করতে চায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। আজার বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চান, তিনি তাইওয়ানের পাশে আছেন। সেই বার্তা দিতেই আমি এখানে এসেছি। এটা আমার কাছে সম্মানের বিষয়।” উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এই প্রথম তাইপেইর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসল ওয়াশিংটন। বিশ্লেষকদের মতে, ‘এক চিন’ নীতি থেকে দূরে সরে বেজিংকে বৈঠকের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। বিষয়টি যে চিনের (China) কাছেও স্পষ্ট তা বোঝা গিয়েছে মার্কিন সচিবের ভ্রমণ নিয়ে বেজিংয়ের অস্বস্তি ও শক্তি প্রদর্শনে।
বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে এসেছে চিন। তাই আমেরিকাকে বার্তা দিতেই দু’দেশের বৈঠকের ঠিক আগে তাইওয়ানের প্রণালী দিয়ে জে ১১, জে ১০ যুদ্ধবিমান পাঠায় চিন। যদিও দু’টি যুদ্ধবিমানকে ধরে ফেলে ভূমি থেকে্ আকাশে ছোঁড়া যুদ্ধবিমান ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র। এই নিয়ে তৃতীয়বার তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকল চিনা যুদ্ধবিমান। শেষবার ২০১৬ সালে এমনটা হয়েছিল। তবে শুধু মার্কিন স্বাস্থ্য প্রধানের সফর নয়, আরও একটি বিষয়ে আমেরিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তাইওয়ান। চিনের আপত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতি নির্ধারক কমিটি অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেমব্লি-র সদস্য হতে পারছিল না। এ ক্ষেত্রেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের পাশে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চিন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও জেদংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা চিয়াং কাই শেকের জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চিন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেজিংভিত্তিক চিনা সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। বর্তমানে তাইওয়ানকে চিনের স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
[আরও পড়ুন: সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন হোয়াইট হাউসের সামনে গুলি! মাঝপথেই সরানো হল ট্রাম্পকে]
The post তাইওয়ান সফরে মার্কিন আধিকারিক, শক্তি প্রদর্শনে যুদ্ধবিমান পাঠাল চিন appeared first on Sangbad Pratidin.