সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এলন মাস্কের পর বিল গেটস। করোনা পরবর্তী বিশ্বে মার্কিন ধনকুবেরদের নয়া গন্তব্য হয়ে উঠেছে চিন। শুক্রবার কমিউনিস্ট দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করলেন মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস। জল্পনা, ভারত থেকে বিনিয়োগ কাড়তেই কি ‘আঙ্কেল স্যামে’র ধনপতিদের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিচ্ছে বেজিং?
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এদিন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস। বেজিংয়ে সরকারি দিয়াওউতাই গেস্টহাউসে হয় এই বৈঠক। আলোচনা শেষে জিনপিং বলেন, “আমেরিকার জনগণের উপর সবসময়ই আমার আশা ও আস্থা রয়েছে। আপনিই (বিল গেটস) আমার প্রথম মার্কিন বন্ধু যাঁর সঙ্গে এবছর বেজিংয়ে সাক্ষাৎ হল। আমি বারবার বলি চিন-আমেরিকা সম্পর্কের ভিত হচ্ছে দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক। আমি আশা করি এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘নিষিদ্ধ শহরে’র পথে ব্লিঙ্কেন, মোদি-যাত্রায় কি সিঁদুরে মেঘ?]
জানা গিয়েছে, সংক্রামক ব্যধি নিয়ে গবেষণা ও ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে চিনের সহযোগিতা চান গেটস। বেজিং মিউনিসিপাল গভর্নমেন্ট ও সিমঘিয়া ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে ‘গ্লোবাল হেলথ ড্রাগ ডিস্কভারি ইন্সটিটিউট’-এর জন্য আর্থিক অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে ‘Bill & Melinda Gates Foundation’।
বিশ্লেষকদের মতে, গেটসের চিন সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, করোনা পরবর্তী বিশ্বে বিদেশি লগ্নির জন্য মুখিয়ে রয়েছে ভারত। পরিসংখ্যান বলছে, মোদি সরকারের আমলে গত এক দশকে ভারতের অর্থনীতির মূল দুর্বলতার জায়গা হল লগ্নির অভাব। বেসরকারি ক্ষেত্রে যেমন লগ্নি নেই, তেমনই ব্যাপকভাবে ধাক্কা খাচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগও। সরকারি তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে, গত একবছরে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ১৬ শতাংশের বেশি কমেছে। এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন ধনপতিদের উদ্দেশে চিনা গালিচা নয়াদিল্লির মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
পরিস্থিতি জটিল করে, ভারত সরকারে ঋণের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। কয়েক দিন আগে, বর্তমান বছরে সরকারের আর্থিক ঘাটতির যে-তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২২-’২৩-এ ফিসক্যাল ডেফিসিট গিয়ে পৌঁছেছে জিডিপির ৬.৪ শতাংশে। ’২০-’২১-এ কোভিডের বছরে ফিসক্যাল ডেফিসিট পৌঁছেছিল ৯.২ শতাংশে। সে-সময় সরকারি খরচ কয়েক গুণ বেড়েছিল।
দেশে এই ফিসক্যাল ডেফিসিট বরাবর ৩ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাঘুরি করত। ২০১৪ সালে, নরেন্দ্র মোদি যে-বছর ক্ষমতায় এলেন, সেই বছরে ফিসক্যাল ডেফিসিট ছিল ৪.৫ শতাংশ। মোদির প্রথম পাঁচ বছরে ফিসক্যাল ডেফিসিট নতুন করে বাড়েনি। কিন্তু ২০১৯ থেকেই ফিসক্যাল ডেফিসিট বাড়তে থাকে। কোভিডের সময় তা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছয়। তারপরেও কমার হার দেখা যাচ্ছে না।