সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিনগ্রহীদের তৈরি করা আস্তানা? নাকি পূর্বসূরিদের পরিত্যক্ত মহাকাশযান? চাঁদের (Moon) প্রত্যন্ত কোণে, ঘনক-সম ওই বস্তুটি কী, যার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে চিনা (China) রোভারের তোলা ছবিতে? গত মাসেই এই প্রশ্নে জেরবার হয়েছিলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সমাধান হল রহস্যের।
চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা CNSA একটি ডায়রি প্রকাশ করেছে। চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আওতাধীন চ্যানেল ‘আওয়ার স্পেস’-এ ইউতু-২ নিয়মিত তাঁর চন্দ্রান্বেষণের ডায়েরি প্রকাশ করে। যার নাম ‘আ চাইনিজ ল্যাঙ্গোয়েজ সায়েন্স আউটরেক চ্যানেল’। চিনের চন্দ্রাভিযান নিয়ে বিশদে লেখা রয়েছে তাতে। সেখানেই রয়েছে, কীভাবে চাঁদের মাটিতে অবস্থিত চিনা রোভার খুঁজে পেয়েছে কুঁড়েঘরের আসল হদিশ।
চাঁদের মাটিতে থাকা রহস্যময় কুঁড়েঘর, যা কিনা ভিনগ্রহীদের তাঁবুও হতে পারে বলে কেউ কেউ দাবি করতে শুরু করেছিলেন তা আসলে একটি বোল্ডার! হ্যাঁ, চাঁদের মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য অজস্র বোল্ডারেরই একটিকে দূর থেকে কুঁড়েঘর বলে ভ্রম তৈরি হয়েছিল।
ওই মিশন ডায়রিতে লেখা হয়েছে, ‘‘রহস্যময় কুঁড়েটি আসলে খুবই ছোট। যা দেখে হতাশই হতে হয়।’’ বোল্ডারটির খুদে আকৃতির জন্য এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জ্যাডেড র্যাবিট’। আপাতত সেই বোল্ডারটিকেই খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যিই এটি চাঁদেরই পাথর, নাকি কোনও ছিটকে পড়া গ্রহাণুর অংশ সেটাই খুঁজে বের করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর চিনা মহাকাশযানটি চাঁদে পাড়ি দিয়েছিল, সেটিও এখনও সেখানেই রয়েছে। তবে রহস্যময় কুঁড়েঘরটির হদিশ মিলেছিল চলতি বছরের নভেম্বরে, খবর প্রকাশ্যে আসে ডিসেম্বর নাগাদ। সঙ্গে ছিল ছবি। ওই ছবিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় শোরগোল।
চিনের প্রকাশিত ডায়রি থেকে তথ্য নিয়েই স্পেস.কম লিখেছিল, “উত্তরের আকাশের দিকে হঠাৎ চোখ পড়ল। আকাশের সীমারেখা ঘেঁষে কী যেন একটা রয়েছে ওখানে! আগে দেখা যায়নি। এখন যাচ্ছে। দেখতে ঠিক রহস্যময় একটা কুঁড়েঘরের মতো। ঠিক পাশেই রয়েছে একটা গহ্বর। কী ওটা? ক্র্যাশল্যান্ডিং করার পর ভিনগ্রহীরা চাঁদে যে ঘাঁটি গড়েছে, সেটা? নাকি, চাঁদে এর আগে যে সব মহাকাশচারীরা গিয়েছেন, তাঁদের ফেলে যাওয়া কোনও মহাকাশযান?” অবশেষে সমাধান হল সেই রহস্যের। মহাকাশপ্রেমীরা যে এতে খানিক নিরাশই হয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।