সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উইকিলিক্স প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে হত্যার ছক কষেছিল মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ (CIA)। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। মার্কিন ফৌজ ও গুপ্তচর সংস্থার বেশ কয়েকটি গোপন নথি ফাঁস করে দিয়েছিলেন ওই অস্ট্রেলিয়ান।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: স্বমেজাজে জেহাদিরা, কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করল তালিবান]
প্রাক্তন গোয়েন্দা আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে Yahoo News জানিয়েছে, লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জকে অপহরণ করে খুনের ছক কষেছিল সিআইএ। উইকিলিক্স-এ বাগদাদে মার্কিন ফৌজের অভিযান ও আফগানিস্তানে আমেরিকার কীর্তিকলাপ সংক্রান্ত একর পর এক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। ফলে ২০১৭ সালে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তাঁকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছিল। জানা যায়, বেশ কয়েকবছর ধরেই সিআইএ-র রাডারে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। তবে ‘Vault 7’ নামের মার্কিন গুপ্তচর সংস্থার ‘হ্যাকিং টুলস’-এর অত্যন্ত সংবেদনশীল খবর ফাঁস করতেই তাঁকে খতম করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে, রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসার পর গোটা বিশ্বজুড়ে রীতিমতো আলোড়ন শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আমেরিকা কি অ্যাসাঞ্জকে সন্ত্রাসবাদী মনে করে? শুধুমাত্র সরকারি গোপন তথ্য ফাঁসে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিকে মেরে ফেলার কথা কী করে ভেবেছিল আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থাটি। বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি সিআইএ। এবার প্রশ্ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও ভাবমূর্তির পরোয়া না করে হঠাৎ অপহরণের ছক কেন কষেছিল সিআইএ? রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেই সময়ে মার্কিন গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন, অ্যাসাঞ্জকে তাঁদের দেশে নিয়ে যেতে চাইছেন রুশ গোয়েন্দারা। তাই তাঁকে যাতে কোনও ভাবে হাতছাড়া না করা যায়, সেই জন্য অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো ব্রিটিশ পুলিশকেও জানানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে উইকিলিকস নামের ওয়েবসাইটটি চালু করেন অ্যাসাঞ্জ। সেই ওয়েবসাইটে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন নথিপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। আর এই কারণে তাঁর উপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয় মার্কিন প্রশাসন। গ্রেপ্তারি এড়াতে কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গত বছরের ১১ এপ্রিল লন্ডন পুলিশ উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে লন্ডনে তাঁর বিচার চলছে। এদিকে আমেরিকা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন ও সরকারি কম্পিউটারে হ্যাকিং-সহ ১৮টি অভিযোগ এনেছে। রয়েছে যৌন হেনস্তার অভিযোগও। দোষ প্রমাণিত হলে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে কয়েক দশক জেলে কাটাতে হতে পারে। তাই অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তরের জন্য চাপ দিচ্ছে আমেরিকা। লন্ডনের আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে তাঁরা।