চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) নির্দেশ জাল করে নিম্ন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। এবার মুর্শিদাবাদের কান্দির এই ঘটনায় এফআইআর করে তদন্ত শুরু করার পর সাফল্য পেল সিআইডি (CID)। শনিবার রাতে হাওড়া স্টেশন থেকে এই মামলায় আসামী লালু শেখের পুত্র লাবু শেখকে গ্রেপ্তার করে রবিবার কান্দি (Kandi) মহকুমা আদালতে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে নিল সিআইডি। কান্দি মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী শুভ্রকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, “সিআইডি এদিন লাবু শেখকে মহকুমা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারকের সামনে হাজির করতে ১৪ দিনের নিজেদের হেফাজতের আবেদন জানালে বিচারক ১০ দিন মঞ্জুর করেন। লাবু শেখ এই মামলায় আসামী লালু শেখের পুত্র।”
তবে সিআইডি এই মামলার তদন্তকারী অফিসার শিমুল সরকার জানিয়েছেন, “হাই কোর্টের নির্দেশ আমরা এই মামলার তদন্ত শুরু করেছি। কান্দি থানায় একটা মামলা শুরু করে তদন্ত চালানো হছে। এই মামলায় একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা হেফাজতে নিয়েছি। পরে আরও প্রকাশ পাবে।”
[আরও পড়ুন: রোহিত-বিরাটে মজে সি ভি আনন্দ বোস, পাকিস্তান ‘বধে’র পরই ভারতীয় দলকে রাজভবনে আমন্ত্রণ]
তবে এদিন ধৃত যুবক লাবু শেখ জানিয়েছেন, “আমাকে হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি যা জানি সব বলব। কত টাকার খেলা হয়েছে। এর পিছনে কোন কোন আইনজীবী রয়েছে সব জানাব। আমাদের জাল কাগজ দেবে ভাবতে পারিনি।” যদিও কান্দির সাধারণ বাসিন্দাদের আবেদন, “আইনকে এভাবে অবমাননা করার সাহস যাদের হয় তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। কান্দি মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী সুনীল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্ৰামে বালির ঘাটকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বোমাবাজিতে মৃত্যু হয় আশরাফ শেখের। ভরতপুর থানায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তারপরেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ লালুকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং সাজাও ঘোষণা করা হয়েছিল।”
[আরও পড়ুন: পাশে পড়ে কন্ডোম, মহিলার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধারে ক্রমশ জোরাল ধর্ষণ করে খুনের সন্দেহ]
এর পর ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লালু শেখকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে কান্দি আদালত। কিন্তু পরবর্তীতে অভিযুক্তের আইনজীবী সেই সাজার বিরুদ্ধে গিয়ে ৬ মার্চ ২০২১ সালে অভিযুক্ত লালু শেখকে জামিনের উদ্দেশে হাই কোর্টের আবেদন করে এবং কলকাতা হাই কোর্টের একটি ভুয়ো নির্দেশিকা কান্দি মহকুমা জেলা দায়রা আদালতে পেশ করেন। আর যে নির্দেশিকা কার্যত মঞ্জুর করেন এবং ওই আসামিকে জামিন দেয় কান্দি মহকুমা আদালত। আড়াই বছর পর আদালতের সেই ভুল ও কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশিকা তথ্য ফাঁস হয়। পরে পুরো ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের পক্ষ থেকে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।