শেখর চন্দ্র, আসানসোল: 'গ্যাংস্টার' সুবোধ সিংকে নিজেদের হেফাজতে পেতে মরিয়া ছিল সিআইডি। ১৪ দিনের আবেদন করেছিল। অবশেষে সেইমতো সুবোধ সিংকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেল সিআইডি। আগামী ১৭ জুলাই সুবোধ সিংয়ের পরবর্তী হাজিরা আসানসোল আদালতে।
আদালতের নির্দেশ ছিল, বেউর জেল কর্তৃপক্ষ সুবোধ সিংকে আসানসোল আদালতে আনবে ৩ জুলাই। কিন্তু সিআইডি তাকে নিয়ে চলে আসে ৩০ জুন। তাই সুবোধের আইনজীবীরা ১৪ দিনের আপত্তি জানায়। অন্যদিকে, জেলা দায়রা জজ আদালত থেকে সুবোধের মামলা চলে যায় সিজেএম আদালতে। অভিযোগ, জেলা আদালতের স্থানান্তরের নির্দেশনামার নথি বদলে যায় সিজেএম আদালতে। বাড়তি সাবমিশন বা নির্দেশনামা অর্ডার কপিতে জুড়ে গেল কীভাবে? প্রশ্ন ছুঁড়ে তীব্র আপত্তি জানান সুবোধের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ ও শেখর কুণ্ডু। চলে তীব্র বাদানুবাদ। তবে বুধবার ২০২২ সালের রানিগঞ্জের ডাকাতির ঘটনার কথা উল্লেখ করে সুবোধকে ১৪ দিনের হেফাজতে চাওয়া হয়। সওয়াল জবাবের পর সুবোধকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
[আরও পড়ুন: ফের খাস কলকাতায় শুটআউট, বান্ধবীকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী যুবক!]
বুধবার কড়া নিরাপত্তায় সুবোধকে আনা হয় আসানসোল আদালতে। আসানসোল জেল থেকে সাতটি গাড়ির কনভয়ে বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে আসানসোল আদালতে আনা হয় 'গ্যাংস্টার'কে। দেখা গেল, বিভিন্ন আইনি জটিলতা তৈরি হওয়ায় এক আদালত থেকে অন্য আদালতে সুবোধকে নিয়ে সিআইডিকে ছোটাছুটি করতে। সকাল ১০ টা ৫০ নাগাদ সুবোধ সিংকে আনা হয় সিজেএম (চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালতে। সেখানে লক আপে দীর্ঘক্ষণ রাখার পর আনা হয় এডিজে ওয়ান আদালতে। এডিজে অর্থাৎ অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ বা অতিরিক্ত জেলা দায়েরা জজ আদালতে সুবোধকে পেশ করে সিআইডি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। আপত্তি তোলে সুবোধের আইনজীবী। বিচারকও জানিয়ে দেয় এই আদালত ট্রায়াল কোর্ট। অভিযুক্তকে হেফাজতে পাঠানোর এক্তিয়ার নেই। মামলা স্থানান্তরিত করা হয় সিজেএম আদালতে। সিজেএম আদালতে সুবোধের বিরুদ্ধে আসানসোল, হীরাপুর, রানিগঞ্জ ও দুর্গাপুরে চারটি ডাকাতির মামলার প্রসঙ্গ তোলা হয় আদালতে। এছাড়া বেলঘরিয়ার শুটআউটের কথাও উল্লেখ করা হয়। বারাকপুরে ব্যাবসায়ীকে তোলা চেয়ে হুমকি ফোন। টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা খুনের মামলায় যোগের কথাও বলা হয়।
বহু চেষ্টার পরে সিআইডি সুবোধকে নিয়ে আসে বাংলায়। ইতিমধ্যেই তদন্তকারী সিআইডি অফিসারকে সুবোধ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও সুবোধের দাবি, তিনি কোনও হুমকি দেননি। হুমকি দিচ্ছে সিআইডি। সুবোধ এতটাই প্রভাবশালী তার লোকজন তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা। তাই কড়া প্রহরার মধ্যেই আনা হয়েছে জেলে। এবার আদালত থেকে কলকাতা পর্যন্ত সুরক্ষিতভাবে সুবোধকে নিয়ে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ। শেষ পর্যন্ত সিজেএম আদালতের রায়ে সুবোধকে ১৪ দিনের জন্য নিয়ে যায় সিআইডি।