অভিষেক চৌধুরী, কালনা: নন্দীগ্রামের কঙ্কাল কাণ্ড থেকে ক্যানিংয়ে ডাইনি সন্দেহে মেরে পুঁতে দেওয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের জটিল কেসের তদন্তে একবারে সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। একের পর এক জটিল কেসে রহস্যভেদ করা ও কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য রাজ্যের সিআইডির (CID) সেরা তদন্তকারী অফিসার হিসেবে সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়কে মনোনীত করা হয়েছে। এই কারণে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ মেডেল দেওয়া হবে বলে কয়েকদিন আগেই নবান্ন থেকে একটি নির্দেশিকাও দেওয়া হয়। এমন খবরে পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দারা অত্যন্ত খুশি। কারণ বর্তমানে তিনি পূর্বস্থলী থানার আইসি হিসাবে কর্মরত।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্বস্থলী থানায় আইসি হিসাবে আসেন সন্দীপ। আসতেই খুনের ঘটনা-সহ বেশ কয়েকটি কেসের জটিল কেসের তদন্ত করে তার রহস্যভেদ করেন। খুব অল্প সময়েই একের পর ঘটনার রহস্য উন্মোচন, সেই সঙ্গে সব মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে সদ্ভাব বজায় রেখে মিশে যাওয়া- তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে নবান্ন থেকে নির্দেশিকা জারি হয় কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য ৪ জন পুলিশ অফিসারকে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ মেডেল দেওয়া হবে। তার মধ্যে সিআইডি, ইবি, আইবির মতো তিনটি উল্লেখযোগ্য ডিপার্টমেন্টের মধ্যে রাজ্যের সেরা তদন্তকারী অফিসার হিসাবে সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়কে মনোনীত করা হয়।
[আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন সেন্টারে পুলিশের দাদাগিরি! মহিলাদের ‘মারধর’, তীব্র চাঞ্চল্য বাঁকুড়ায়]
স্বাভাবিক ভাবেই এমন খবরে খুশি ৪৮ বছর বয়সি বেহালার বাসিন্দা সন্দীপও। ১৯৯৮ সালে রাজ্যের পুলিশ দপ্তরে তিনি চাকরি পান। প্রথম পোস্টিং হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানায়। এরপর আসানসোল উত্তর, দক্ষিণ, রানিগঞ্জ থানায় দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি সিআইডিতে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট(মার্ডার সেকশন)-এর কাজে যোগ দেন। ৯ বছর সেখানে থাকার পর স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি)-তে যোগ দেন। এখান থেকে ফের ভবানী ভবনের নার্কোটিক ওসি হিসাবে কাজ শুরু করেন।
এই বছর তিনি পূর্বস্থলী থানায় আসেন।
একেবারেই প্রচারবিমুখ এই অফিসারের একের পর এক সফলতা তাঁকে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের সেরা পুলিশ মেডেল ও শংসাপত্র দেওয়ার জন্য কয়েকদিনের মধ্যে তাঁকে ডাকা হবে। এই বিষয়ে সন্দীপবাবুকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষজনের আশীর্বাদ, সহযোগিতা সর্বদা পেয়েছি। আমার ডিপার্টমেন্ট, পরিবারের মানুষজন আমার পাশে না থাকলে এই সাফল্য পেতাম না।”
[আরও পড়ুন: কোর্স ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ, পড়ুয়াদের বিক্ষোভে উত্তাল ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতী]
এমন খবরে খুশি এলাকার বিধায়ক, বিডিও-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা। বিডিও সৌমিক বাগচি জানাচ্ছেন, “খুবই মিষ্টি মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ মেডেল সন্দীপবাবু পাচ্ছেন শুনে আমরা গর্বিত।” বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “এলাকায় শান্তি বজায় রাখা সহ অপরাধদমনে উনি খুবই দক্ষ অফিসার। রাজ্যের মানুষজন এর সুফল পাচ্ছেন। পুলিশ বিভাগে কর্মদক্ষতার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই পুরস্কার তাঁকে দিচ্ছেন শুনে আমরা খুবই খুশি।”