সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ঢোলাহাট কাণ্ডে এবার তদন্তভার হাতে নিল সিআইডি। তবে সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়ায় মৃত যুবকের পরিবার সন্তুষ্ট নয়। সুন্দরবন জেলা পুলিশ সেই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত চালাচ্ছে। মৃতের পরিবারের দাবি, সিআইডি তদন্তে আসল সত্য প্রকাশ হবে না। তাঁরা চান বিচার বিভাগীয় তদন্ত বা সিবিআই তদন্ত হোক, তবেই প্রকাশিত হবে আসল সত্য।
ঢোলাহাট কাণ্ডের জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ঢোলাহাটে চুরির দায়ে অভিযুক্ত যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে মামলা দায়ের হয় আদালতে। আবেদনকারীর আইনজীবীর দাবি, জামিন নিশ্চিত করতে পুলিশকে দিতে হয়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। একইসঙ্গে, চুরির দায়ে ধৃত ওই যুবককে ইলেকট্রিক শকও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। আদালতে রাজ্য জানায়, গত ৩ জুলাই রাত ৮ টা ৫ মিনিটে মৃত যুবকের কাকা মহসিন হালদার থানায় সোনার গয়না এবং নগদ টাকা চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই এর পরের দিন অর্থাৎ গত ৪ জুলাই ভোর ৩ টে ৪৫ মিনিটে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। রাজ্য পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানায়, কিন্তু বিচারক জামিন দেন। পরিবারের বক্তব্য, জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফেরার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে মথুরাপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসকরা সাড়া না দেওয়ায়, তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পার্ক সার্কাসের বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: ন্যায় সংহিতা খতিয়ে দেখতে কেন কমিটি? মুখ্যমন্ত্রীর রিপোর্ট তলব রাজভবনের]
সেই মামলায় হাসপাতালে মৃত যুবকের মেডিক্যাল রিপোর্ট তুলে ধরে রাজ্য। রাজ্যের কৌঁসুলি আদালতে জানান, হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে যে, মৃতের জন্ডিস ছিল। যে কারণে তাঁর ইউরিয়া এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। অভিযোগকারী কাকাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে রাজ্য। তার প্রেক্ষিতে মৃত যুবকের দেহ সংরক্ষণের পাশাপাশি তাঁর ময়নাতদন্তের ভিডিও রেকর্ডিং সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। একইসঙ্গে, আদালতের নির্দেশ, কাকদ্বীপ সাব-ডিভিশনাল হাসপাতালের ৪ জুলাইয়ের ভিডিও ফুটেজও সংরক্ষণ করতে হবে হাসপাতালকে। সেই সঙ্গে, যে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই মতো দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গত শনিবার কবর থেকে তোলা হয় মৃত যুবকের দেহ।