অর্ণব আইচ ও শেখর চন্দ্র: কয়লা পাচার কাণ্ডের (Coal Smuggling Scam) তদন্তে গতি বাড়াচ্ছে সিআইডি। পাচার মামলায় আরও তথ্যের খোঁজে এবার আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে তলব। সূত্রের খবর, শুক্রবার ভবানী ভবনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। নোটিস পেয়েছেন বলেই জানান জিতেন্দ্র।
কয়লা পাচার মামলায় এখনও পর্যন্ত খনি এলাকায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি (CID)। তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়। তারপরই ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত খনি অঞ্চলের তিন থানার দায়িত্বে থাকা মোট ১০ কর্মী, আধিকারিককেও জেরা করা হয়। সূত্রের খবর, সকলকে জেরা করে জিতেন্দ্র তিওয়ারির যোগসাজশের খোঁজ পাওয়া যায়। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতেই সিআইডি আগামিকাল জিতেন্দ্রকে ভবানী ভবনে তলব করেছে। সিআইডি নোটিসের সত্যতা স্বীকার করেছেন জিতেন্দ্র। তিনি বলেন, “পুজোর আগে পুজোর উপহার। ২০২০ সালে অন্ডাল থানার একটি মামলায় তলব করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে নোটিস পেয়েছি। তদন্তে সহযোগিতা করা প্রত্যেক জনগণের কাজ। চেষ্টা করব।” জিতেন্দ্রর আরও দাবি, তলব নিছকই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
[আরও পড়ুন: ‘মহিলাদের অপছন্দ করেন, পুরুষ পছন্দ করেন শুভেন্দু’, বললেন অভিষেক]
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর আচমকা শহরের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে প্রথমে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)। পরে দলের জেলা সভাপতির পদও ছেড়ে দেন। কিন্তু মাত্র দু’দিনের মধ্যেই তিনি কলকাতায় রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলে নিজের ভুল স্বীকার করে আবার দলে ফিরে আসেন। তারপর তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ও দলীয় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দেখা করেন ও দলে কাজকর্ম শুরু করেন। ফেসবুকে জানিয়েছিলেন, ‘দিদিকে ছেড়ে কোথাও যাব না।’
এরপর কলকাতায় তৃণমূল ভবনে হিন্দি-সহ বিভিন্ন ভাষার বুদ্ধিজীবী ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্মেলন করা হয়েছিল। সেই মঞ্চেই সুব্রত বক্সী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। ফিরে এসেও নিজের হারানো ‘রাজত্ব’ ফিরে পাননি আসানসোলের ‘বেতাজ বাদশা’ জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তারপর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন। দীর্ঘ টালবাহানার পর গত বছর বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, পাণ্ডবেশ্বরে টিকিট না পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ চরমে ওঠে। এরপরই দলবদলের সিদ্ধান্ত।