গোবিন্দ রায়: লালন শেখ মৃত্যু কাণ্ডে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলার শুনানিতে গোটা ঘটনাটি দুঃখজনক বলে ব্যাখ্যা করলেন বিচারপতি। জানালেন, তদন্তভার থাকবে সিআইডির হাতেই। কিন্তু কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না এফআইআরে নাম থাকা ৭ সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি মৃতের স্ত্রীকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ আদালতের।
বুধবার দুপুর তিনটেয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে শুরু হয় মামলার শুনানি। সেখানে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, মৃত লালন শেখের স্ত্রীকে এই মামলায় যুক্ত করা হল না কেন? বলেন, “অধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর হতেই আপনারা নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, অথচ যিনি মারা গেলেন তাঁর পরিবারের কথা ভাবলেন না?” জবাবে সিবিআই জানায়, “আদালতের নজরদারিতে বগটুই মামলার তদন্ত চলছে। তিন দিনের সিবিআই হেফাজতে ছিল লালন। যেদিন ঘটনা ঘটে সেদিন সকাল থেকেও সে ভালই ছিল। বাথরুমে কলের পাইপে গামছা জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছে লালন শেখ। দেহ নামানোর সময় ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। দেহ পরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেও ভিডিও করা হয়েছে।” সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও জানায়, গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে যে দু’জন সিবিআইয়ের অধিকারিক গ্রেপ্তার করেছিলেন সেই আইও’র নাম জড়ানো হয়েছে। বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের আইনজীবীর। সিবিআই আধিকারিকদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
[আরও পড়ুন: ‘সরকারের ভূমিকা ঠিক থাকলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করব’, TET প্রসঙ্গে মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
লালনের মৃত্যুর তদন্তভাব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে। সে প্রশ্নে সিবিআই বলে, ”এটা ভাবা যায়? এখানে যা ঘটেছে তাতে সকলেই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।” সিবিআই-এর মন্তব্য মোটেই ভালভাবে নেয়নি রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের কেন হেয় করা হচ্ছে জানি না। রাজ্য পুলিশের অনেক দক্ষ আইপিএস অফিসার রয়েছেন, যাঁরা অনেক বেশি দায়িত্ব পালন করেন নিরপেক্ষভাবে। তবে পুরো সিবিআই এজেন্সিকে দায়ী করা হচ্ছে না।এদিন তাও স্পষ্ট করা হয় রাজ্যের তরফে।
শুনানির শেষে বিচারপতি জানিয়েছেন, আপাতত সিআইডির হাতেই থাকবে তদন্তভার। তবে এফআইআরে নাম থাকা ৭ সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। মৃতের স্ত্রীর বক্তব্য না শুনে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না আদালত। লালন শেখের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হবে কল্যাণীতেই। মৃতের স্ত্রীকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।