সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও ননীচোরা দাস বাউল যতই বলছেন 'বেশি তাকাস না', ততই মানুষ বেশি করে দেখছেন। কী দেখছেন? 'বহুরূপী'র কাণ্ডকারখানা। মাল্টিপ্লেক্স তো বটেই সিঙ্গল স্ক্রিনেও জনজোয়ার। একবার, দুবার এবং তারও বেশি সংখ্যক মানুষ আসছেন নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত সিনেমার টানে। পুজোর সময় থেকে ছক্কা হাঁকাচ্ছে 'বহুরূপী'। পুজোর পরও ভরছে হল। বিশেষ করে সিঙ্গল স্ক্রিন। এতেই খুশি হল মালিকরা।
প্রায় হাউসফুল হলের সংখ্যায় রবিবারও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে 'বহুরূপী'। এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মিনার ও বিজলী সিনেমা হলে কর্ণধার সুরঞ্জন পাল। তাঁর কথায়, "আজকে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদবাবুর যে প্রতিষ্ঠা। এত সাফল্য। এটা আবারও প্রমাণ করে দিল যে এই পরিচালক জুটির উপরে দর্শকদের প্রচণ্ডভাবে আস্থা রয়েছে। এই পার্টনারশিপই ভালো ছবি ডেলিভার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস তাঁদের। শিবপ্রসাদ নিজে একজন দক্ষ অভিনেতা। আজকে উনি দেখিয়ে দিলেন যে ভালো পরিচালক হতে গেলে আগে ভালো অভিনেতা হতে হয়।
আমাদের মিনার এবং বিজলী দুই প্রেক্ষাগৃহেই পুজোর সময় কমবেশি ভালোই ব্যবসা হয়। পুজোর পরও যে এত দর্শকের ঢল তা আমার জীবনে দেখা এই প্রথম। দ্বিতীয় সপ্তাহতেও কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে আমার হল। বাংলা সিনেমায় নতুন জোয়ার এনেছে বহুরূপী। আমরা সব সিঙ্গেল স্ক্রিন মালিকরা ভীষণ খুশি।"
উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী স্টার থিয়েটারের মালিক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "পুজোর পর এই প্রথম কোন সিনেমাকে আমি তিনখানা শো দিয়েছি। যার মধ্যে গত শনি ও রবিবার তিনটে হাউজফুল। প্রথমদিকে পুজোর পর নাইট শো দিতে আমি খানিক ইতস্তত করেছিলাম, তারপর দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে চো আমি অবাক। শিবুর (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) সাথে কথা বলতে শিবু বলল, কি দাদা মুখ রাখতে পেরেছি তো? আসলে পুজোর আগে তিন মাস খুব খারাপ গিয়েছিল। আমরা আশা করব বহুরূপী আরও ভালো চলুক। দর্শক যেভাবে এই ছবিটাকে গ্রহণ করেছে। শুধু মুখের কথায় একবার নয় দুবার নয়, তার চেয়েই বেশিবার মানুষ আসছে বলেই মনে হচ্ছে।"
বহুদিন পর এটা দরকার ছিল বলেই মনে করেন প্রিয়া সিনেমা হলের কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত। নবীনা সিনেমা হলেও হাউসফুল 'বহুরূপী'। সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, "পুজোর পরও প্রত্যেকটা শো প্রায় হাউসফুল। মানুষের ভালো লাগছে। আগামী দিনেও আশা করি সব ছবি ভালো লাগবে। সবার মুখে একটাই কথা, আরও একবার ছবিটা দেখলে ভালো হয়।" অশোকা সিনেমা হলের মালিক প্রবীর রায় বলেন, "পুজোর সময় তো সব শো সাকসেসফুলই ছিল। কিন্তু বহুরূপী লম্বা রেসের ঘোড়া। পুজোর পর যে এভাবে টানবে সেটা প্রথম দুদিনেই আমরা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। এই ছবি বহু নতুন রেকর্ড গড়বে বলে আমার বিশ্বাস, এবং বক্স অফিসে ছবির যা কালেকশন হবে সেটা বহুদিন কোনও বাংলা ছবির হয়নি।" প্রসঙ্গত, আবির চট্টোপাধ্যায়, ঋতাভরী চক্রবর্তী, কৌশানি মুখোপাধ্যায়দের ছবি ইতিমধ্যেই উইকিপেডিয়ার সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করা বাংলা সিনেমার তালিকায় সর্বোচ্চ স্থানটি দখল করে ফেলেছে।