সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সকালে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন খালেদা জিয়া। বিগত কয়েক দিন ধরেই ওসমান হাদির মৃত্যুতে জ্বলছে বাংলাদেশ। এমতাবস্থায় খালেদার প্রয়াণে 'অভিভাবকহীন' পদ্মাপাড়ের রাজনৈতিকমহল। এদিন হাসপাতালের তরফে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোকের আবহ বাংলাদেশজুড়ে। আগামী তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে ইউনুস সরকারের তরফে। শোকবার্তার ভিড় সোশাল পাড়াতেও। এবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করলেন 'নগরবাউল' জেমস।
ফেসবুকে শোকপ্রকাশ করে জেমস লেখেন, "শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন- আমিন (পোস্টের ভাষা অপরিবর্তিত রাখা হল)।" খালেদার পরিবারের উদ্দেশেও সমবেদনা জানিয়েছেন শিল্পী। সোমবার রাতেই মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন খালেদাপুত্র তারেক রহমান। তার আগে বিএনপি দফতরের সামনে থেকে মায়ের আরোগ্যকামনায় প্রার্থনার অনুরোধও রেখেছিলেন তিনি। তবে রাত পোহালেই যে মায়ের এহেন দুঃসংবাদ আসবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও কল্পনা করেননি তারেক! এমতাবস্থায় খালেদার শোকবিধ্বস্ত পরিবারের পাশে জেমস। ফেসবুক পোস্টে তাঁর সংযোজন, 'শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।'
নগরবাউল জেমসের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করেছেন বদলের বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা তথা পরিচালক মোস্তাফা সরওয়ার ফারুকী। তাঁর মন্তব্য, "আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র অনন্তের উদ্দেশে তাঁর সফর শুরু করেছেন! বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি কামনা করি।"
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামী জীবনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য নিয়েও অনেকদিন ধরে লড়েছেন খালেদা জিয়া। কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস, চোখের সমস্যা শেষ জীবনে তাঁকে জর্জরিত করে ফেলেছিল। লন্ডনে গিয়ে মাস ছয়েক চিকিৎসা করার পরও শরীর তেমন সুস্থ হয়নি। গত ২৩ নভেম্বর ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের দিয়ে তৈরি মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। মাঝেমধ্যে চিকিৎসায় সাড়াও দিয়েছেন অশীতিপর নেত্রী। কিন্তু তাঁদের সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ করে মঙ্গলবার সকালে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন বাংলাদেশের 'গণতন্ত্রের প্রথিকৃৎ' খালেদা জিয়া।
১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার জন্ম। তাঁর আসল নাম ছিল খানুম পুতুল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানকে বিয়ের পর বেগম খালেদা জিয়া হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বা বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর তাঁর হাত ধরে রাজনীতিতে আসা। মেজর জিয়ার মৃত্যুর পর সক্রিয়ভাবে গণতান্ত্রিক পথে পা বাড়িয়েছেন খালেদা জিয়া।
