ধ্রবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: জল্পনা সত্যি করে শুক্রবার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং জয়প্রকাশ মজুমদারের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন পার্নো মিত্র (Parno Mittra)। যোগদান প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিনেত্রী জানান, "একটা সময়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। যেরকম ভেবেছিলাম বিষয়টা সেভাবে এগোয়নি। তবে ভুল তো মানুষ মাত্রই করে।" এরপরই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন পার্নো। পাশাপাশি দলীয় পতাকা হাতে 'জয় বাংলা' স্লোগান দিতেও শোনা গেল অভিনেত্রীকে।
পার্নোর তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগে আকৃষ্ট হয়ে পার্নোই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন।" পাশাপাশি 'অভিনেত্রী পার্নো'র প্রশংসা করে তিনি বলেন, "২০০৭ সাল থেকে সিনেজগতে তাঁর পদাপর্ণ। এত স্বল্প সময়েই চল্লিশটিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নাগরিক হিসেবে মানুষের পাশে থাকার কর্তব্য সম্পর্কেও পার্নো যথেষ্ট সচেতন। আমাদের মাননীয়া বরাবরই নারী উন্নয়নের কথা বলেন। মাননীয়ার নির্দেশে পার্নোকে দলে স্বাগত জানাচ্ছি আমরা।" অন্যদিকে 'পদ্ম অধ্যায়' প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, "২০১৯ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন পার্নো মিত্র। একুশের ভোটেও লড়েছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির যাবতীয় দলীয় কর্মসূচী থেকে নিষ্ক্রিয় তিনি।"
তৃণমূল ভবনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, জয়প্রকাশ মজুমদারের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ পার্নো মিত্রর। নিজস্ব চিত্র
সামনেই ছাব্বিশের বিধানসভা ভোট। তার প্রাক্কালেই তৃণমূলে যোগ দিলেন পার্নো। যা কিনা অভিনেত্রীর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা উসকে দিল, বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গতবারের বিধানসভা নির্বাচনেও অবশ্য প্রার্থী হিসেবে ভোটের ময়দানে ছুটেছিলেন পার্নো। তবে তৃণমূলের তাপস রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে বরানগরের জমিতে পদ্ম ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন অভিনেত্রী। এদিকে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, ঘনিষ্ঠ মহলের কাছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগড়ে দিয়েছিলেন পার্নো। এবার তৃণমূলে যোগ দিয়েই জানালেন, বিজেপিতে যাওয়া ভুল ছিল।
উনিশের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন একঝাঁক টলিউড তারকায সেই তালিকায় পার্নোও ছিলেন। তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরই যে বিজেপির থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছেন নায়িকা, সেখবরও আগেই মিলেছিল। এবার ছাব্বিশ সালের বিধানসভা ভোটের আগে পার্নো মিত্রর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়টিকে ইঙ্গিতপূ্র্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে টলিপাড়ার কোন কোন তারকামুখকে দেখা যাবে? প্রতিবারই সেই কৌতূহল থাকে। পার্নোর তৃণমূলে যোগ দেওয়া কি সেদিকেই ইঙ্গিত করছে? ছাব্বিশে বাংলার ভোটে কি অভিনেত্রীকে তৃণমূলের পদপ্রার্থী হিসেবে দেখা যাবে? নজর থাকবে সেদিকে।
