শম্পালী মৌলিক: শুধু রক্তরচিত কাব্য নয়, বড়দিনে থ্রিলারের রোমাঞ্চও দর্শকদের উপহার দিয়েছে প্রতিম ডি. গুপ্তর ‘চালচিত্র’। টানটান থ্রিলের সঙ্গে মানবিক আবেগের মিশ্রণ পেয়েছে সমালোচকদের প্রশংসা। এবার খবর জবর। টলিপাড়ায় গুঞ্জন, নিজের কপ-ফ্র্যাঞ্চাইজিকে আবারও দর্শকদের দরবারে নিয়ে আসবেন পরিচালক।
শোনা যাচ্ছে, এবার সিক্যুয়েল প্লাস প্রিক্যুয়েলের বুনটে তৈরি হবে চিত্রনাট্য। হোমে বন্দি সাইকোপ্যাথ ‘ভুবন হালদার’-এর (ব্রাত্য বসু) চরিত্রটাকে আরও বিশদে দেখাতে চান পরিচালক। অতীত-বর্তমান মিলেমিশে যাবে সে গল্পে। কপ ইউনিভার্সের ত্রয়ী টোটা রায়চৌধুরী, শান্তনু মহেশ্বরী, ইন্দ্রজিৎ বসু থাকছেন নিশ্চিত। আর অবশ্যই জিয়াউল ফারুক অপূর্বর চরিত্রটি থাকবে। এই ছবির পর তাঁর কী হল সেই নিয়ে দানা বাঁধতে পারে কাহিনি। তবে নাসিরের চরিত্রটি থাকবে ফ্ল্যাশব্যাকে। কীভাবে? তা এখনই নিশ্চিত বলা না গেলেও,
অনির্বাণ চক্রবর্তী থাকছেন।
প্রসঙ্গত, বিশ্বক মুখোপাধ্যায়ের ‘কেদার ফাইল্স’ বই থেকে পুলিশের কর্মজগতের ধারণা পান প্রতিম। বাকি চিত্রনাট্য নিজস্ব মুন্সিয়ানায় প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিদেশি থ্রিলারের ছায়া থাকলেও ‘চালচিত্র’-র অন্তরাত্মা দেশজ, অথচ সব প্রান্তের সিনেমাপ্রেমীকে ছুঁয়ে যাবে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দেখে অভ্যস্ত এখনকার দর্শক অনেক সময় আগে থেকে সিরিয়াল কিলিংয়ের মোটিভ আন্দাজ করে নিতে পারে। সেখানে এই ধরনের ছবি বানানো শক্ত। নির্দিষ্ট ব্যক্তির মনোজগতে এমন কোনও ক্ষত থাকে যা তাকে হিংস্রতার দিকে এগিয়ে দেয় লাগাতার। এ ছবিতেও তা ঘটেছে, চলচ্চিত্রায়ন চমৎকার।
পুলিশের কাজের পাশাপাশি তাদের পারিবারিক জীবনটা এমন বুনেছেন প্রতিম, একটা অন্যটার থেকে আলাদা করা যায় না। অভিনয়ে টোটা রায়চৌধুরি প্রায় ‘আনবিটেবল’। অনির্বাণ চক্রবর্তী ‘মিস্টার ডিপেন্ডবল’। নবাগত ইন্দ্রজিৎও খুব ভালো। শান্তনু মহেশ্বরী পাশের বাড়ির ছেলে হলেও তার ক্যারিশমা আলাদা। নারীচরিত্রদের স্ক্রিন টাইম কম হলেও গুরুত্ব কম নয়। স্বস্তিকা দত্ত চোখে কথা বলেন। চরিত্রের প্রত্যেকটা স্তরে তিনি অভিনয়ে প্রাঞ্জল। প্রিয়া বাংলা ছবিতে প্রথমবার, কিন্তু নজরকাড়া। তানিকা বসু প্রথমদিন থেকেই অনবদ্য কাজ করেন। এই ছবিতে তিনি সব ওভারে বাউন্ডারি মেরেছেন। রাইমা তাঁর স্নিগ্ধতা দিয়ে চরিত্রের চাহিদা মিটিয়েছেন সুন্দর। স্বল্প পরিসরে ভালো লাগে অনিন্দিতা বোসকেও। ছবির মাস্টারস্ট্রোক ব্রাত্য বসু। অতএব পরের পর্বের অপেক্ষায় দর্শকরা।