সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমাজ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। বাইশ গজের ক্রিকেট ময়দান থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বত্র পুরুষের মতো মহিলাদেরও জয়জয়কার। তা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর বিয়ে, সন্তান জন্ম নিয়ে নানা মানুষ নানা উপদেশ দেন তাঁদের। সেই সমস্ত পরামর্শদাতাদের কথা মাথায় রেখে মহিলাদের টিপস দিতে গিয়ে বিপাকে রাম চরণের স্ত্রী উপাসনা কামিনেনী।
সম্প্রতি আইআইটি হায়দরাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানেই বক্তব্যের ফাঁকে প্রশ্ন করেন কারা বিয়ে করতে চান? সে প্রশ্নের জবাবে যাঁরা হাত তোলেন, তাঁদের বেশিরভাগ পুরুষদের। এই দৃশ্য দেখে রাম চরণ ঘরনি বলেন, "আমি দেখলাম ঘরে উপস্থিত মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা হাত তুলেছেন। তার মানে আমাদের দেশের উন্নতি হচ্ছে। এটা অগ্রগতির লক্ষণ। মেয়েরা নিজেদের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করুন। এটা জীবনের সব থেকে বড় শান্তি।" কেন এমন উপদেশ, সে ব্যাখ্যাও দেন তারকাপত্নী। তাঁর মতে, "ডিম্বাণু সংরক্ষণ করলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পর কখন বিয়ে করবেন আর কখন সন্তানের জন্ম দেবেন, তা নিজের মতো করে স্থির করতে পারবেন।" এই মন্তব্য সোশাল মিডিয়ায় হু হু করে ভাইরাল হয়ে যায়। নেটদুনিয়ায় ওঠে সমালোচনার ঝড়। সাধারণ নেটিজেনের পাশাপাশি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রাজেশ পারিখও তারকাপত্নীর প্রশ্ন শুনে বিরক্ত। তিনি বলেন, "ডিম্বাণু সংরক্ষণের কথা বলা সহজ যখন অনেক ব্যাঙ্ক থাকবে। আইভিএফের খরচও অনেক। ডিম্বাণু সংরক্ষণের খরচ কয়েক লক্ষ টাকা। আপনার কথামতো তাই সকলের পক্ষে সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়।" আবার কারও কারও মতে, ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রাখা মানেই যে ভবিষ্যতে সন্তান ধারণে কোনও সমস্যা হবে না, তা নয়।
দিনভর নানা কাটাছেঁড়ার পর নিজের মন্তব্য নিয়ে মন্তব্য করেন উপাসনা। X হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "আমি খুব খুশি যে একটা সুস্থ আলোচনা হয়েছে।" তিনি আরও লেখেন, "২৭ বছর বয়সে আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করি। ব্যক্তিগত এবং শারীরিক কারণে সিদ্ধান্ত নিই ২৯ বছর বয়সে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করি। অন্যান্য মহিলাদের উজ্জীবিত করতে আমার গোপন কথা বলা প্রয়োজন। ৩৬ বছর বয়সে আমি প্রথম সন্তানের জন্ম দিই। ৩৯ বছর বয়সে বর্তমানে যমজ সন্তান আমার গর্ভে। গোটা যাত্রাপথে আমার কেরিয়ার এবং বৈবাহিক সম্পর্ককে সমান গুরুত্ব দিয়েছি। একটি সুস্থ পরিবারের জন্য সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন। আমার কাছে কেরিয়ার এবং বিয়ে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কোনটাই কারও প্রতিযোগী নয়। শুধুমাত্র আমি নিজের মতো করে সময় নির্বাচন করেছি।" উপাসনা ব্য়াখ্যায় যেন কান দিতে নারাজ নিন্দুকরা। পরিবর্তে 'ডিম্বাণু সংরক্ষণের পরামর্শ' নিয়ে কাটাছেঁড়ায় এখনও ব্যস্ত তারা।
