সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক হোক সামাজিক, যে কোনও ইস্যুতেই ঋত্বিক চক্রবর্তী বরাবরই সরব। ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে নিজের মতামত প্রকাশ করে থাকেন। এবার এসএসসি মামলায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়েও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন।
শীর্ষ আদালতের কলমের খোঁচায় চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। রুটিরুজি হারিয়ে দিশাহীন তাঁরা। এসএসসি চাকরিহারাদের হাহাকারে ভারী হয়েছে বাতাস। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কীভাবে সংসার চলবে? কীভাবে মিটবে ঋণ? অবিবাহিত বোনের বিয়ে দেবেন কীভাবে? আদালের নির্দেশ মাফিক সুদ-সহ বেতনের টাকাই বা ফেরানো হবে কীভাবে? চিন্তায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছে চাকরিচ্যুতদের মাথায়। এবার সেই প্রসঙ্গেই 'ভেন্ট্রিলোকুইজম'-এর মাধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।
এক ভিডিওতে মাইক চেকের কায়দায় ঋত্বিককে বলতে শোনা যায়, 'হ্যালো মাইকিং, হ্যালো!' সাউন্ড চেকের পরই হাতের পুতুলটি বলে, 'অযোগ্যকে যদি যোগ্য আর অযোগ্য বাছতে বলা হয়, তাহলে অযোগ্য, যোগ্যর দিকেও থাকে না অযোগ্যর দিকেও থাকে না।' এরপরই অভিনেতার প্রশ্ন, তাহলে? তড়িঘড়ি পুতুলের জবাব, সে শুধু নিজের দিকে থাকে এবং প্রমাণ করে সে অযোগ্য! একথায় ঋত্বিকের উত্তর, এটা তো সবাই জানে। ব্যঙ্গের ভঙ্গিমায় পুতুলকে বলতে শোনা যায়, ও মাইক টেস্টিং! তখনই তার মুখে হাত দিয়ে ঋত্বিক থামার কথা বলেন। ২৬ হাজার চাকরিচ্যুতদের নিয়ে কৌতুকাচ্ছলে হলেও গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন বলে মনে করছেন অনুরাগীরা।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছিল ২০১৬-র এসএসসি প্যানেল। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কোর্টের কলমের খোঁচায় চাকরি হারিয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। শীর্ষ আদালতে দফায় দফায় সেই মামলার শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিল এবং বেতন ফেরতের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। তারপর থেকে দফায় দফায় শুনানি চলছিল। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ শুনানি। তখন সিবিআই জানায়, তারা চাইছে, কলকাতা হাই কোর্টের ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় বহাল থাকুক। স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, র্যাংক জাম্প বা প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের তথ্য থাকলেও ওএমআর শিট কারচুপির তথ্য তাদের কাছে নেই। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, একসঙ্গে এতজন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হলে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। সবপক্ষের সওয়াল শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত রায় শোনান তিনি। বাতিল করেন ২৫,৭৫২ হাজার চাকরি। এই রায়ের পর থেকেই চাকরিহারাদের হাহাকারে ভারী কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। কেউ পরিবারের একমাত্র চাকুরিজীবী। কারও বা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দায়ভার কাঁধে। কারও ঘরে ছোট সন্তান। কীভাবে হবে দিন গুজরান? এই চিন্তাই যেন রাতের ঘুম কেড়েছে চাকরিহারাদের। তাঁদের ভেঙে না পড়ার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।