ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পৌষ মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচিল তৈরির কাজ বন্ধ করে দিল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি। ঠিকাদার কাজ বন্ধ করতে না চাওয়ায় তাকে ব্যবসায়ী সমিতির লোকজন মারধর করে বলেও অভিযোগ। বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রাক্তনী, আশ্রমিক, শান্তিনিকেতন এবং বোলপুরের বাসিন্দারাও।
গত সপ্তাহে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেও মাঠ ঘেরার প্রতিবাদ জানানো হয়। ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দিন কয়েক থেকে মাঠের ধারে বালি-পাথর সহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ফেলছিলেন ঠিকাদার। শনিবার সকাল থেকে সেখানে পাঁচিল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সেই সময় বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। ঠিকাদারকে পাঁচিল দেওয়ার কাজ বন্ধ করতে বলেন। ঠিকাদার সেই কথা না শুনলে ব্যবসায়ী সিমিতির সদস্যরা তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, কোনভাবেই শান্তিনিকেতনের মেলারমাঠ ঘিরতে দেওয়া যাবে না। এদিন ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা বিশ্বভারতীর কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দেয়।
[আরও পড়ুন : অলৌকিক ঘটনা? পাত্রসায়রে শ্মশানকালী মন্দিরের সাবমার্সিবল পাম্প থেকে বেরোচ্ছে ফুটন্ত জল!]
প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত পৌষমেলার মাঠ বা পূর্বপল্লির মাঠ। মাঠের এক দিকে কেন্দ্রীয় অফিস-সহ বিভিন্ন অফিস, পূর্বপল্লী হস্টেল অন্যদিকে ভাষাভবন ও কবরস্থান। কয়েক একর জায়গার উপর অবস্থিত সবুজে ঘেরা এই মাঠে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সারা বছর ভিড় জমান শান্তিনিকেতন এবং বোলপুরের মানুষ। এবার এই প্রানকেন্দ্রকে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নিল বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্টারন্যাশানাল গেস্টহাউস থেকে রাস্তার পাশ দিয়ে ভাষাভবন পর্যন্ত মাঠের উপর এই পাঁচিল দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় অফিসে যে ভাবে পাঁচিল দেওয়া আছে সেই ভাবেই কিছুটা পাঁচিল এবং তারের ফেনসিং থাকবে। পাঁচিলের বিভিন্ন জায়গায় ৭টি গেট থাকবে।
এদিকে পাঁচিলের পাশাপাশি পান্থশালার কাছে ফাঁকা জায়গাতে গড়ে উঠছে ১৪০০ স্কয়ারফুটের শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট অফিস। সেখানে দূটি বড় রুম, দুটি ছোট রুম, তিনটি শৌচালয়, রান্নাঘর এবং একটি মিটিং রুম। খরচ পড়বে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার বেশি। এই বিষয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সাম্মানিক সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “যে অংশটি ঘেরা হচ্ছে মেলার সময় ওই অংশটি নিরাপদ নয়। মাঠটিকে নিরাপদ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঁচিলের বেশি ফেন্সিং থাকবে।” ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “শান্তিনিকেতনকে কংক্রিটের বেড়াজালে ঘিরে ফেলতে চাইছে বিশ্বভারতী। গুরুদেব এটা কখনও চাননি।”
[আরও পড়ুন : ‘স্বাধীন ভারত অমর রহে’, স্বাধীনতা দিবসেও বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপের]
The post পৌষ মেলার মাঠ ঘেরা নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির বিক্ষোভ, ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগ appeared first on Sangbad Pratidin.