shono
Advertisement

বাবা-মা জোর করে ছাদনাতলায় বসাচ্ছে, বিয়ে রুখতে সটান থানায় দশম শ্রেণির ছাত্রী

কিশোরীর পাশে বাঁকুড়ার প্রশাসন।
Posted: 05:29 PM Jul 03, 2022Updated: 06:26 PM Jul 03, 2022

দেবব্রত দাস, পাত্রসায়ের: বাড়িতে তার বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছিল। সে কথা শুনেই হাতে মাত্র দশ টাকা নিয়ে টোটোয় চেপে সোজা থানায় হাজির হল নাবালিকা ছাত্রী। থানায় ঢুকে ডিউটি অফিসারের রুমে গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের কাছে তার কাতর আবেদন, “স্যর, বাবা-মা আমার বিয়ে দিতে চাইছে। আমার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি। আমি পড়তে চাই। বিয়ে করতে চাই না।”

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় নিজের বিয়ে রুখতে সটান পাত্রসায়ের থানায় গিয়ে কাতর অনুরোধ জানায় বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার হাটকৃষ্ণনগর গ্রামের এক বছর ষোলোর কিশোরী। নিজের বিয়ে রুখতে ‘সাহসিনী’ ওই কিশোরীর আবেদনে অবশ্য সাড়া দিতে একবিন্দু দ্বিধা করেনি পুলিশ প্রশাসন। রাতেই তার অভিভাবকদের থানায় ডেকে বিয়ের যোগাযোগ করতে নিষেধ করা হয়েছে। রবিবার ওই কিশোরীর গ্রামে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন পাত্রসায়রের বিডিও নিবিড় মণ্ডল ও পাত্রসায়ের থানার ওসি বিদ্যুৎ পাল।

[আরও পড়ুন: গভীর রাতে পাঁচিল টপকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়লেন এক ব্যক্তি! নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন]

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী দশম শ্রেণির ছাত্রী। দিনমজুর পরিবারের ওই কিশোরী দুই বোনের মধ্যে বড়। তার বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে পরিবার। কিন্তু কিশোরী এখনই বিয়ে করতে ইচ্ছুক নয়। ওই কিশোরীর কথায়, “এখন বিয়ে করতে চাই না। আমার স্বপ্ন শিক্ষিকা হওয়ার। তাই বিয়ের কথাবার্তা শুনেই আর স্থির থাকতে পারিনি। জানতাম কাউকে বলে কিছু হবে না। তাই  থানায় চলে গিয়েছিলাম।”

পাত্রসায়ের থানার ওসি বিদ্যুৎ পাল বলেন, “বাল্য বিবাহ রোধে আমরা এলাকায় এলাকায় প্রচার চালাচ্ছি।  সে যেভাবে সাহস সঞ্চয় করে থানায় এসে নিজের কথা জানিয়েছে তা আমাদের এই প্রচারের সুফল। আমরা ওর পাশে আছি।”  নাবালিকা ছাত্রীর বাবার দাবি, “একজন বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছিল। বাড়িতে তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। এখনই বিয়ে দিতাম না। তবে মেয়ে যখন চাইছে না তখন আমরা এখন আর বিয়ের কোনওরকম যোগাযোগ করব না। পুলিশের কাছে আমরা মুচলেকা দিয়েছি।”

[আরও পড়ুন: স্টিলের খাটে ঘুমই কাল! রাতে বজ্রপাতের সময় পাথরপ্রতিমায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু দম্পতির]

বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা পাত্রসায়ের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত দত্ত বলেন, “আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রীদের জন্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প চালু করেছেন। নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে দেওয়াটা অপরাধ। ওই কিশোরী নিজে সাহস করে যেভাবে এগিয়ে এসে নিজের বিয়ে বন্ধ করেছে তার জন্য কুর্নিশ জানাচ্ছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার