সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজ চলছে নয়, কাজ হয়ে গিয়েছে। ভাল জনপরিষেবা দিতে এমনটাই শুনতে চান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁর বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। জেলায় প্রশাসনিক কাজকর্ম কেমন হচ্ছে, জনতা কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন, এসব খতিয়ে দেখতে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তিনি। কাজের যাবতীয় তথ্য-পরিসংখ্যান হাতে নিয়ে অসন্তুষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুললেন, ”অনেক কাজ দেখছি, বলা হচ্ছে, আন্ডার প্রসেস। আরে এই আন্ডার প্রসেস ব্যাপারটা কী? খায় না মাথায় দেয়?” তাঁর এই প্রশ্নেই স্পষ্ট, তিনি ঠিক কী চাইছেন। প্রশাসনিক কাজে লালফিতের ফাঁস, দীর্ঘসূত্রিতার যে ট্র্যাডিশন বছরের পর বছর চলছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আসার পর তা অনেকটাই মিটেছে। সেই কাজে আরও গতি আনাই তাঁর লক্ষ্য। আর তাই কোনও কাজে ঢিলেমি তিনি পছন্দ তো করেনই না, বিলম্বের খবর শুনে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
পুরুলিয়ার (Purulia) রবীন্দ্র ভবনে সোমবার দুপুর নাগাদ প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু থেকেই কাজ নিয়ে তাঁর অসন্তোষ দৃষ্টি এড়াচ্ছিল না। বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পরই কার্যত বিস্ফোরণ ঘটালেন তিনি। হাতে কাগজপত্র নিয়ে বলে উঠলেন, অনেক কাজের স্টেটাস আন্ডার প্রসেস। এই ব্যাপারটা কী? কত কাজ আন্ডার প্রসেস? যে সব প্রকল্পের কাজ হচ্ছে না, সেগুলিকেই এভাবে দেখানো হচ্ছে। দেখুন, কিছু আন্ডার প্রসেস বলে এড়িয়ে যাবেন না। আমি চাই, সব কাজ সময়ের মধ্যে মিটিয়ে ফেলুন। আন্ডার প্রসেসের তালিকা বাড়াবেন না।” এ থেকেই স্পষ্ট, ‘আন্ডার প্রসেস’ শব্দটি তাঁর একেবারেই না-পসন্দ।
[আরও পড়ুন: ‘মিষ্টি পাঠাও’, নাইটদের অভিনন্দনের জবাবে বাংলায় টুইট গুজরাটের]
এদিন ফের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কাজ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএলআরও (BLRO) অফিসে গেলে সাধারণ নাগরিক সাহায্য় পাচ্ছেন না, দালালচক্রের শিকার হচ্ছেন। এসব অভিযোগ জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাজে। আর তাতেই দপ্তরকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ”জমির পাট্টা নিয়ে বিএলআরও অফিসে গেলেও, কাজটা করার জন্য টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমার কাছে অভিযোগ আসছে। কেউ একজন জমির মালিকানা বদল করার জন্য গিয়েছিলেন, তাঁকে বলা হয়েছে, নতুন পরচা তৈরি করতে হবে, টাকা লাগবে। কেন এটা হবে?” যাঁরা জমি নিয়ে এমন অনৈতিক কাজ করছেন, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের সেসব কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: গড়ফার ফ্ল্যাটে মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, সুইসাইড নোট ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য]
প্রসঙ্গত, এর আগেও প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই দপ্তরকে ‘ঘুঘুর বাসা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও কাজে ঢিলেমি দেখে তিনি এবার সরাসরি ভূমি রাজস্ব দপ্তরের অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। আর পুরুলিয়ার বৈঠক থেকে গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিলেন।