বাবুল হক, মালদহ: বারবার সংসদে বাংলার দাবি উড়িয়ে গঙ্গার ভাঙন রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার যখন উদাসীন, ঠিক তখনই তার মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ল রাজ্য সরকার। গঙ্গার ভাঙন (Ganga Erosion) রোধের জন্য প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করে রাজ্যের সেচ দপ্তরকে দ্রুত কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। পাশাপাশি শুক্রবার তিনি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের (Samserganj) ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন তিনি। তিনদিনের জেলা সফর সেরে এদিনই ফিরবেন কলকাতায়।
নয়া প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এবার ভাঙন প্রতিরোধের কাজ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নদীর পাড়ে ভেটিভার ঘাস, সমুদ্রপাড়ের মতো ম্যানগ্রোভ (Mangrove) জাতীয় গাছ লাগানো হবে। মালদহ-মুর্শিদাবাদ জেলার এই ভাঙন রোধে দিঘাকে ‘মডেল’ করা হবে। কারণ, দিঘায় পাড় সহজে ধসে পড়ে না। নতুন প্রযুক্তিতে কাজ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গঙ্গার ভাঙনের কবল থেকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। ঘাস আর ম্যানগ্রোভের পাশাপাশি গঙ্গার পাড় থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আর নতুন করে কোথাও কোনও বাড়ি তৈরি করা যাবে না। বৃহস্পতিবার মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: আত্মঘাতী স্ত্রী, শোকে জলের ট্যাঙ্কে উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের!]
আমের (Mango) জেলা মালদহে আমবাগান কেটে সাফ করে দিচ্ছে একশ্রেণির মাফিয়ারা। প্রশাসনিক বৈঠকেই এই অভিযোগ শুনতে পান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, কেন আমবাগান কেটে ফেলা হচ্ছে? ব্যক্তি মালিকানাধীন বলেই কি প্লট করে বিক্রি করা হচ্ছে? মালদহে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া এখন থেকে আর কোনও বাগান বিক্রি করা যাবে না।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গঙ্গার ভাঙনটা এখন একটা সিরিয়াস ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। এটা সেন্ট্রাল সাবজেক্ট। মালদহের মতোই সামশেরগঞ্জের অবস্থা খারাপ। ধুলিয়ানেও এই অবস্থা। সাত বছর টাকা দেয়নি কেন্দ্র। ফরাক্কার জলবণ্টন চুক্তির ৭০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কেন্দ্র সেই টাকাও দেয়নি।”
[আরও পড়ুন: মসজিদে হিন্দু যুগলের বিয়ে, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ বিতর্কের মধ্যেই ভিডিও শেয়ার রহমানের]
সমস্যা সমাধানের কথা বলতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ভাঙন রোধের জন্য আমরা সাধ্যমতো টাকা দিচ্ছি। কিন্তু সেই টাকা জলে চলে যাচ্ছে। পুরনো টেকনোলজিতে কাজ হচ্ছে না। নতুন প্রযুক্তি দরকার। এজন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে রাখতে হবে। অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। দিঘায় নতুন প্রযুক্তিতে কাজ হয়েছে। পাড় ভেঙে পড়ছে না। সেই টেকনোলজি দরকার। এবছর ৫০ কোটি দিলাম। পরের বছর আবার ৫০ কোটি দেব। টেন্ডারের সময় বলে দিতে হবে, কাজটি করার পর ২০ বছর দেখভাল করতে হবে ঠিকাদার সংস্থাকে।”