কুণাল ঘোষ, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী: “দেশে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে লড়াই থাকুক। দেশের বাইরে আমরা ঐক্যবদ্ধ ইন্ডিয়ান। সেই কারণে শিল্প সম্মেলনের কোনও অনুষ্ঠানে রাজনীতির কথা বলিনি।” সোমবার সকালে বার্সেলোনায় শিল্পপতি এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিগত এক সপ্তাহের শিল্প সফর নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছিল। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মাদ্রিদে দারুণ সাড়া পেয়েছি। লা লিগাকে কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক ভাবনাচিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে একটি টিম কলকাতা যাবে। কিশোর ভারতীর সেটআপ অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। বাকি যেটুকু দরকার লা লিগার সঙ্গে আলোচনা করে করা হবে।”
সোমবার দুপুরে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্থানীয় শিল্পপতি কমল মিত্তলের কারখানা দেখতে যায়। মূলত রেলের লাইন ও যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় শিল্পপতি মিত্তলের কারখানায়। তিনি পশ্চিমবঙ্গে লগ্নিতে আগ্রহী। অত্যাধুনিক জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিলিগুড়িতে কারখানা তৈরির ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এই পদক্ষেপ কার্যত নতুন মাইলফলক। বলে রাখা ভাল, এদিন দুপুরের পর বেশ কয়েকটি শিল্প বৈঠক রয়েছে। আগামিকাল মূল শিল্প বৈঠক বা শিল্প সম্মেলন রয়েছে। তার প্রস্তুতি চলছে পুরোদস্তুর।
এদিকে, মাদ্রিদ থেকে বার্সেলোনা পর্যন্ত প্রবাসী ভারতীয়দের আপ্যায়ন এবং উৎসাহে আপ্লুত ও অভিভূত মুখ্যমন্ত্রী। বার্সেলোনায় রবিবারের অনুষ্ঠানটির উদ্যোক্তা প্রবাসী বাঙালিরা হলেও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যেভাবে উৎসাহ দেখিয়েছেন তাতে বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রী। অনেকে বলছেন, “আপনি আসবেন, অপেক্ষায় ছিলাম। এই প্রথম ভারতের কোনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী স্পেনে এলেন। আপনার কাজের কথা শুনেছি। আপনি আগে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য বিশ্ব খেতাব নিতে এসেছিলেন বলে আমরা গর্বিত। বাংলা বদলে গিয়েছে, এগিয়েছে তা আজ আপনাকে দেখে বুঝতে পারলাম।”
[আরও পড়ুন: মমতা ‘প্রধানমন্ত্রী’! বার্সেলোনার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভুল ঘোষণা সঞ্চালকের]
সোমবার সকালেই বার্সেলোনা পৌঁছে যান শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া। ঘরোয়া আলোচনায় ছিলেন মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত, মহামেডান স্পোর্টিংয়ের কর্তা ইশতিয়াক আহমেদ (রাজু), ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের সুচরিতা বাসু। এদিন দুপুরে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বন্দনা যাদব কারখানা পরিদর্শনে যান। সবমিলিয়ে, এদিন শিল্পবান্ধব পরিবেশের বার্তা, লগ্নির বিশ্বাস ও গর্বিত ভারতীয় হিসেবে নিজেকে আবারও তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।