shono
Advertisement

শক্তিগড় শুটআউট: খুন হতে পারেন, আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন কয়লা মাফিয়া রাজু

শক্তিগড় শুটআউটের সাতদিন কেটে গেলেও অধরা দুষ্কৃতীরা।
Posted: 02:38 PM Apr 08, 2023Updated: 02:38 PM Apr 08, 2023

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এমন কোনও জায়গায় থাবা মেরেছিলেন যাতে কী মৌচাকে ঢিল পড়েছিল? কোনও বড় কারবারির স্বার্থে আঘাত লেগেছিল? কোনও হুমকিও কী এসেছিল? প্রাণঘাতী হামলা হতে পারে এমন কোনও আঁচও কী পেয়েছিলেন? ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্তা ও খুব কাছের লোকজনের কাছে খুন হতে পারেন এমন আশঙ্কার কথা কেন জানিয়েছিলেন কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা? ঘটনার পর সাত দিন কেটে গেলেও এই সবের উত্তরের খোঁজে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। এই সব প্রশ্নের উত্তর উদ্ধার করতে পারলে রহস্য উন্মোচনের খুব কাছে পৌঁছতে পারবেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

বেআইনি কয়লা কারবারের বেতাজ বাদশাহ ছিলেন রাজু ঝা। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর রাজুর এই কারবার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সিবিআই কয়লা পাচার মামলায় তদন্ত শুরু করে। ধরপাকড়ও করে। তখন থেকেই বিকল্প পদ্ধতিতে কারবারের জাল বিস্তার শুরু হয়েছিল রাজু ও তার সহযোগীদের। ইসিএলের ডিস্ট্রিবিউশন অর্ডার (ডিও) পাওয়া পরিবহণ সংস্থার উপর ডান্ডা ট্যাক্স (তোলা) চালু করেছিল। সেখানেই থামেনি অর্থের পিপাশা। বৈধভাবে যে সব ব্যবসায়ী ইসিএলের কয়লা নিলামে কিনে বিক্রি করতেন তাদের কারবারেও থাবা বসাতে শুরু করেছিল ‘রাজু অ্যান্ড কোম্পানি’। কীভাবে?

[আরও পড়ুন: কুড়মি আন্দোলন: শনিবারও বাতিল দূরপাল্লার ৭২টি ট্রেন, মালগাড়ি আটকে ক্ষতি ১৪০০ কোটির]

ইসিএল খনি থেকে উত্তোলিত বিভিন্ন গুণগত মানের কয়লা নিলাম করে বিক্রি করে। ‘এমজাংশন’ নামে একটি সংস্থার অনলাইন নিলাম প্ল্যাটফর্মে ‘বিড’ করে এই কয়লা কেনার সুযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন খনি থেকে কয়লা নিলামে অংশ নিয়ে কেনে বহু সংস্থা। সেই কয়লা তারা অন্যত্র বিক্রি করে বেশি দামে। মোটা লাভ পায় সংশ্লিষ্ট সংস্থা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, নিলামে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা যত টাকা বিড করছেন তার থেকে সামান্য বেশি টাকা দিয়ে কয়লা নিয়ে নিচ্ছিল রাজু অ্যান্ড কোম্পানি। এক আধিকারিক জানান, কথায় ধরা যাক ১০০ টাকা দিয়ে বিড করে কয়লা কিনেছে যে সংস্থা তাকে ১০৫ টাকা দিয়ে কার্যত জোর করে রাজু অ্যান্ড কোম্পানি সেই কয়লা নিয়ে নিচ্ছে। তার পর তা কয়েকগুণ বেশি দামে অন্যত্র বিক্রি করছে এই বৈধ কয়লা। ফলে সামান্য লাভ করতে পারছে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা। এইভাবে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা পকেটে ঢুকছিল রাজু অ্যান্ড কোম্পানির। স্বার্থে ঘা পড়েছিল সরকারিভাবে বরাতপ্রাপ্ত বহু সংস্থার। সূত্রের খবর, সেই সব সংস্থার মালিকরা খুব বড় দরের ‘মাফিয়া’। বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে তাদের জাল। ভিনরাজ্যের রাজনৈতিক কেউকেটাদের হাত তাদের মাথায় থাকা অবিশ্বাস্য কিছু নয়।

ইসিএলের বৈধ কয়লার কারবারে এইসব রাঘব বোয়ালদের সঙ্গে পাঙ্গা নিতে গিয়েই রাজুকে মূল্য চোকাতে হয়েছে প্রাণের বিনিময়ে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তদন্তে ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্যের চোরাই গাড়ি, ভিনরাজ্যের শার্প শুটারদের কাজে লাগানো সহ বিভিন্ন তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। ‘অপারেশন রাজু’ এমন নিখুঁত পরিকল্পনা করে রূপায়ণ করা হয়েছে তাতে এর পিছনে খুব বড় মাথা রয়েছে বলে অনুমান করছে সিট।

[আরও পড়ুন: কুড়মি আন্দোলন: শনিবারও বাতিল দূরপাল্লার ৭২টি ট্রেন, মালগাড়ি আটকে ক্ষতি ১৪০০ কোটির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement