শেখর চন্দ্র, আসানসোল: দেউচা পাচামির পর রাজ্যে আরও এক কয়লাখনি প্রকল্প। বীরভূমের পর এবার পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনির গৌরান্ডি পানুরিয়ায় দ্রুত কয়লা ব্লকের কাজ শুরু করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন নিগম বা ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। আর এই খনির কাজ শুরু হলে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সূত্রের খবর,দরপত্রের মাধ্যমে একটি সংস্থা এই প্রকল্পের দায়িত্বও পেয়েছে। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া কয়েকদিন পরই শুরু হবে। আর জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই কাজ শুরু হলে প্রায় ৭০০ জনের প্রত্যক্ষ এবং ৫ হাজার জনের পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
[আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁস রুখতে কোন কোন জেলায় বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট? দেখে নিন তালিকা]
ইতিমধ্যেই এনিয়ে আসানসোলের সার্কিট হাউসে রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে প্রশাসনিক স্তরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন নিগমের সিএমডি সহ আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ আধিকারিকরা। আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জমি অধিগ্রহণ। এই প্রকল্প শুরু করতে হলে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তবে সেই জমির বিনিময়ে জমিদাতাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চাকরি দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রক পশ্চিম বর্ধমান জেলার বারাবনির গৌরান্ডি এলাকায় হাজার কোটি টাকার একটি খোলামুখ খনি প্রকল্প শুরুর বরাত দেয়। ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন ও ট্রেডিং কর্পোরেশনকে একটি টেন্ডার করা হয়। প্রকল্প শুরু করতে ৩৭০ হেক্টর জমি প্রয়োজন। জানা গিয়েছে পানুরিয়া, দাসকেয়ারি, কাঁটাপাহাড়ি, জামগ্রাম, আলিগঞ্জ এই মৌজাগুলি কয়লা প্রকল্পের আওতায় আসবে।
[আরও পড়ুন: রোজ রাতে বিয়ারে চুমুক দেওয়ার অভ্যাস? এতেই বাড়ছে মস্তিষ্কের বয়স]
আদিবাসী অধ্যুষিত শিবধাওড়া গ্রামের বাসিন্দা কালীপদ টুডু, প্রদীপ টুডু, শ্যামল সোরেনরা বলেন, “নতুন কয়লা খনিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষের নিজস্ব জমি নেই। অনেকই ইসিএলের ভেসটেড ল্যান্ড ও ফরেস্টের জমিতে ঘর করে আছেন। তবু এসব মানুষদের জন্য সাড়ে পাঁচশো বর্গফুট বাড়িতে তৈরি করে দেওয়া হবে। আমরা খুশি এই ঘোষণায়।” স্থানীয় বাসিন্দা লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, তপন মণ্ডলরা বলেন, ” আমরা চাই শিল্প আসুক। যাঁদের জমি আছে তাঁরা প্রত্যক্ষ ও যাঁদের জমি নেই পরোক্ষভাবে তাঁরা উপকৃত হবেন। গৌরাণ্ডি খনি প্রকল্প ইসিএলের থেকেও ভালো প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা এই কয়লাশিল্পকে স্বাগত জানিয়েছি।” আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় জানান, “যে সংস্থা টেন্ডার পেয়েছে তারা সি ব্লক থেকে কয়লা খনন প্রথমে শুরু করবে। যত দ্রুত সম্ভব জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়েছে সংস্থাকে।”