সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুঃসময় যেন কাটছেই না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাঁর প্রচার অভিযানের প্রাক্তন প্রধান পল ম্যানাফোর্ট। আর আদালতে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের প্রাক্তন ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন স্বীকার করে নিলেন, তাঁর মক্কেলের নির্দেশেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যৌনকেচ্ছা ধামাচাপা দিতে দু’জনকে গোপনে অর্থ দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী তহবিল থেকেই ওই অর্থ খরচ করা হয়েছিল। যা ট্রাম্প গোপন করেন। যার জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইনি ঝামেলায় ফাঁসতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
[চিনা ভীতি কাটাতে ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়েছেন মোদি]
মঙ্গলবার সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ভরা আদালত কক্ষে নিজের দোষ মেনে নেন মাইকেল কোহেন। স্বীকার করেন, হলিউডের পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলস ও প্রাক্তন প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডোগালের মুখ বন্ধ করতে কয়েক লক্ষ ডলার দিয়েছিলেন তিনি। ম্যানহাটন আদালতে কোহেনের বিরুদ্ধে প্রচার তহবিলের গরমিল, ব্যাংক জালিয়াতি ও করফাঁকি-সহ ৮টি ফৌজদারি মামলা চলছে। তারই একটির শুনানিতে কোহেন মঙ্গলবার আদালতে এ কথা জানান। ম্যানহাটন আদালতে ট্রাম্পের প্রচার তহবিলের যে হিসেব দাখিল করা হয়েছে, তাতে প্রায় তিন লক্ষ ডলারের গরমিল রয়েছে। কোহেন আদালতে জানিয়েছেন, তার মধ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার দিয়ে পর্নস্টার ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ করা হয়। আর দেড় লক্ষ ডলার দেওয়া হয় বিখ্যাত প্লেবয় মডেল ম্যাকডোগালকে। দু’জনের সঙ্গেই ট্রাম্পের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর দায়িত্বটা ট্রাম্প তাঁকেই দিয়েছিলেন বলে জানালেন প্রাক্তন ব্যক্তিগত আইনজীবী। ১২ ডিসেম্বর তাঁর শাস্তি ঘোষণা হবে।
ম্যানহাটনের আদালতে কোহেন জানিয়েছেন, স্টর্মি ও ক্যারেন বেফাঁস কিছু বলে ফেললে প্রচার ধাক্কা খাবে এই শঙ্কায় প্রার্থীর নির্দেশে তাঁর প্রচার তহবিল থেকে প্রচুর ডলার নিয়ে ওই দুই মহিলার মুখ বন্ধ করা হয়েছিল। তিনি অবশ্য সরাসরি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি। তবে কোহেনের আইনজীবী ল্যানি ডেভিস একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “কোহেন এ দিন আদালতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাই বলেছেন। ট্রাম্প ওঁকে ওই দুই মহিলার মুখ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।” সরকারি আইনজীবীর দেওয়া চার্জশিটেও ট্রাম্পের নাম নেই। তঁাকে ‘ইনডিভিজুয়াল ওয়ান’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ডেভিসের প্রশ্ন, “যদি কোহেন অপরাধী হন, তা হলে তঁাকে সেই নির্দেশ দেওয়ার জন্য ট্রাম্প কেন অপরাধী হবেন না?”
ট্রাম্প অবশ্য স্টর্মি ও ক্যারেনের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্কের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি গুইলিয়ানি বলেছেন, “কোহেন মিথ্যে বলছে। ওদের ডলার দেওয়া হয়েছিল ট্রাম্প পরিবারকে বিব্রত হওয়া থেকে বাঁচাতে। তার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের কোনও সম্পর্ক ছিল না।” পরে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় একটি সমাবেশে ভাষণের সময় কোহেনের বিবৃতি নিয়ে টুঁ শব্দটিও করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
[ফের মার্কিন নির্বাচনে রুশ হ্যাকারদের থাবা, প্রতিহত করল মাইক্রোসফট]
The post ফাঁস বিস্ফোরক তথ্য, যৌনকেচ্ছা ও ঘুষ মামলায় জেরবার ট্রাম্প appeared first on Sangbad Pratidin.