নব্যেন্দু হাজরা: অভিনয়ের জগৎ থেকে রাজনীতিতে তো অনেকেই এসেছেন। দেব, মিমি, নুসরত থেকে কাঞ্চন মল্লিক, লাভলি মৈত্র, জুন মালিয়া, শ্রাবন্তী–তালিকা দীর্ঘ। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চ থেকে অভিনয়! এবার বক্স অফিসে তাই-ই হতে চলেছে। সেখানেই মন্ত্রী-বিধায়কদের জোর টক্কর।
আগামী ১১ আগস্ট OTT-তে মুক্তি পাচ্ছে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক অভিনীত রাজ চক্রবর্তী নির্দেশিত ওয়েব সিরিজ ‘আবার প্রলয়’। পুলিশের ভূমিকায় সেখানে দেখা যাবে রাজে্যর সেচমন্ত্রীকে। ইতিমধ্যেই ট্রেলার বেরনোর পর যার ডায়লগ রীতিমতো লোকের মুখেমুখে ঘুরছে। অন্যদিকে ২৫ আগস্ট আবার মুক্তি পাচ্ছে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অভিনীত বাংলা সিনেমা ‘ওহ লাভলি’। যে ছবিরও ট্রেলার প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। একাধিক জায়গায় ছবির প্রচারে দেখা যাচ্ছে ‘লাভলি ম্যান’ মদনকে।
বন্দুক হাতে রাগী রাগী মুখে মদন মিত্রের পোস্টারও পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন জায়গায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নাট্যকার ব্রাত্য বসুর নির্দেশনায় ক্রাইম থ্রিলার ‘হুব্বা আসছে’-র ট্রেলার মুক্তিও আবার হওয়ার কথা তাড়াতাড়ি। ফলে বিধানসভার অন্দরমহল এখন মন্ত্রীদের অভিনীত, নির্দেশিত সিনেমার আলোচনা ঘিরে সরগরম। কার অভিনয় বক্স অফিসে কতটা ছাপ ফেলে সেটাই এখন দেখার! তবে কোনও কম্পিটিশানের কথা মানছেন না কেউই।
[আরও পড়ুন: লাগাতার কটাক্ষের মুখে মেয়ে আর ছেলে, দুই সন্তানকে বিশেষ পরামর্শ দিলেন কাজল]
পার্থ ভৌমিক বলছেন, ‘‘মদনদা বরাবরই লাভলি ক্যারেকটার। মদনদাকে মানুষ পছন্দ করে। আশা করা যায় ভালই হবে।’’ তবে নিজের ওয়েব সিরিজ নিয়েও বেশ আশাবাদী রাজে্যর সেচমন্ত্রী। বলেন, ‘‘রিলিজের পর মানুষ বলবেন, কেমন অভিনয় করলাম। তবে ছোটবেলা থেকে অ্যামেচার থিয়েটার করি। তারপর ব্রাত্য বসুর হাত ধরে অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। অভিনয়ের খিদেটা আমার ভিতরে ছিলই। রাজ চক্রবর্তী একটা সুযোগ দিয়েছে।
দীর্ঘদিনের একটা ইচ্ছে ছিল কমিক চরিত্রে অভিনয় করার। এবার সেটা হয়েছে। থিয়েটারে আমি সব সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই কমিক চরিত্র আমি পারব কি না সেটা নিয়ে সংশয় ছিল। রাজ আমায় বলল। কতটা পেরেছি, তা তো দর্শক বলবেন।’’ তবে ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে আর নতুন কোনও সিনেমায় অভিনয় করছেন না বলেই জানিয়েছেন পার্থ। এই সময়টা পুরোপুরি রাজনীতিতে দিতে চান তিনি।
এদিকে সিনেমা রিলিজ নিয়ে খোশমেজাজে মদনও। সিনেমার প্রচারে নানা ঝকমারি পোশাকে আর রঙিন সানগ্লাসে নানা সময়ে যাচ্ছেন এখানে-ওখানে। পার্থর অভিনয়ের কথা জেনে খুশি প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীও। বলেন, ‘‘দু’জনেই অভিনয় করছি। তবে কোনও কম্পিটিশন নেই। সাধারণ একটা চরিত্রে আমি রয়েছি। মানুষের আশীর্বাদ চাইছি। একটা গানের কলি নিয়ে সিনেমা এই প্রথম। খুন, জখমের ছবি এটা নয়। এটা একটা প্রেমের ছবি। যেখানে আবার গ্রাম্য রাজনীতিকেও দেখানো হয়েছে।’’ তবে মদনের সংযোজন, পার্থর ওটিটি-ও ভাল হোক। তৃণমূল সবেতে আছে। রাজনীতিতেও আছে। সিনেমাতেও আছে। মানুষের পাশেও আছে।
ব্রাত্য বসুর নির্দেশিত ‘হুব্বা আসছে’ ট্রেলার বেরনোর আগেই আলোচনায়। হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে সিনেমার প্রেক্ষাপট। একসময় গোটা জেলা এবং তার বাইরেও কীভাবে হুব্বার সাম্রাজ্যবিস্তার ছিল, তার উত্থান, কীভাবে মোস্ট ওয়ান্টেড হয়েও সে পুলিশের হাতের বাইরে ছিল, সেসবই তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। তবে ব্রাত্যর কথায়, আমি তো আর নতুন নই। নাটক, নির্দেশনা, সিনেমা সবই আমি বহুকাল ধরে করছি। তবে সে যাই হোক। মন্ত্রী-প্রাক্তন মন্ত্রী, বিধায়কদের পরপর সিনেমা রিলিজে এখন বক্স অফিস কে কাঁপায় সেটাই দেখার।