শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ঠিক কী কারণে ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী হল গুয়াহাটি এক্সপ্রেস, তা এখনও স্পষ্ট নয়। চলছে জোর তদন্ত। যাত্রী এবং রেলচালকের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছেন তদন্তকারীরা। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে জখম যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেস। ১২টি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। তাঁদের অনেকেই এখনও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। শনিবার হাসপাতালে গিয়ে জখম যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান জানার চেষ্টা করেন, দুর্ঘটনার আগে ট্রেনের গতিবেগ কত ছিল? দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে কোনও শব্দ বা ঝাঁকুনি অনুভব করেছিলেন কিনা। জখম যাত্রীরা তাঁদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটিকে জানান। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আগে দুর্ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ১০ মাস আগেই বিয়ে করেছিলেন রেলকর্মী, ট্রেন দুর্ঘটনা কাড়ল প্রাণ, পরিবারের পাশে অগ্নিমিত্রা]
যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে যে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সে ইঙ্গিত রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর মন্তব্যেই স্পষ্ট। তবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত প্রয়োজন বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে ইতিমধ্যেই আহত কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ির থানা এলাকার বাসিন্দা উত্তম রায় বিকানের এক্সপ্রেসের চালকের বিরুদ্ধে রেল পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। চালক প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে ময়নাগুড়ি জিআরপিতে অভিযোগ দায়েরও করেছেন। তাঁর দাবি, চালকের গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা।
শুক্রবারই দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বিকানের এক্সপ্রেসের চালক প্রদীপ কুমার। তিনি বলেন, “গাড়ি ৯৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার স্পিডে ছিল। দোমোহনি স্টেশনে সবুজ সংকেত দেখেই ট্রেনটি চালাই। হঠাৎ অ্যাডভান্স সিগন্যালের আগে ঝাঁকুনি অনুভব করি। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষি। তখনই দেখি পিছনে বগি উলটে গিয়েছে। কীভাবে হল বুঝতেই পারলাম না।” রেল ট্র্যাকের সমস্যার জন্য দুর্ঘটনা বলেই ধারণা তাঁর।