জার্মানি—১ চিলি—০
(স্টিন্ডল)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাচ—আতসবাজির রোশনাই আর মার্চিং ব্যান্ডের মূর্ছনায় কনফেড কাপ ফাইনাল শুরুর আগেই সেন্ট পিটার্সবার্গের গোটা মাঠ হরেক রংয়ে রঙিন। সেটা আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠল, যখন স্টেডিয়ামে ফিফার স্পেশ্যাল বক্সে প্রেসিডেন্ট ইনফানতিনোর সামনে আর্জেন্টিনার মারাদোনা আর ব্রাজিলের রোনাল্ডো একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে দেশ—বিদেশের ফটোগ্রাফারদের পোজ দিলেন। তবে আসল রংটা জার্মানির। বিশ্বকাপের পর এবার কনফেডারেশনস কাপও তাদের বিশাল ট্রফি ক্যাবিনেটে সাজিয়ে ফেলা! বর্তমান বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দেশের অনূর্ধ্ব—২১ টিম দু’দিন আগেই যুব ইউরো কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তবে জোয়াকিম লো—র মস্তানি আরও বেশি। কারণ জার্মানির জাতীয় কোচ কনফেড কাপে নুয়ের, বোয়াতেং, ওজিল, টনি ক্রুজ, টমাস মুলার— গোল থেকে অ্যাটাক, সব বিভাগে সেরাদের বিশ্রামে রেখেও হাসতে হাসতে কনফেড কাপ তুলে নিলেন।
[পুলওয়ামায় হিজবুল জঙ্গিকে নিকেশ করল ভারতীয় সেনা]
প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট বল পজিশনে (৬৮—৩২) জার্মানির থেকে চিলি অনেক এগিয়ে থাকলেও কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের মুখ বেশি খুলেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অথচ ম্যাচের প্রথম মিনিটেই চিলির তারকা আর্সেনাল ফরোয়ার্ড সাঞ্চেজ সুযোগ পেয়েছিলেন জার্মান বক্সে। আরও ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন চিলির দুই তারকা ফরোয়ার্ড ভার্গাস আর ভিদাল। দু’বারই দারুণ সেভ করেন জার্মান কিপার স্টেগান। এরপর উনিশ মিনিটের মাথায় স্যাঞ্চেজের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট। আর জার্মানির সেই ক্লিয়ারেন্স থেকেই পরের মিনিটে দু্ঃস্বপ্নের গোল খাওয়া চিলির। উঁচু বল ক্লিয়ার করতে চিলি ডিফেন্সে তখন একমাত্র দিয়াজ। কিন্তু তাঁর মারাত্মক ভুল ডুবিয়ে দিল ব্রাভোর দলকে। ম্যাচের শুরুতে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি—র অফিসিয়াল টুইটারে তাদের চিলিয়ান গোলকিপার ব্রাভোকে ‘গুড লাক’ জানানো হয়েছিল। কে জানত, সেটা এভাবে বুম্যেরাং হয়ে উঠবে সেমিফাইনালে রোনাল্ডোর পর্তুগালের বিরুদ্ধে মহানায়ক গোলকিপারের ভাগ্যে রবিবাসরীয় ফাইনালে! দিয়াজের জঘন্য মিস পাস গিয়ে পড়ে চিলি বক্সের উপর দাঁড়ানো ওয়ার্নারের পায়ে। তিনি ‘কৃতজ্ঞ চিত্তে’ সেই মিস পাস ধরে দেখেশুনে অসহায়ভাবে আগুয়ান ব্রাভোকে ড্রিবল করে পাশেই উঠে আসা সতীর্থ ফরোয়ার্ড স্টিন্ডলকে মাইনাস করলে তরুণ জার্মান ফুটবলার কেবল জালে বলটা ট্যাপ করে দেন। হাফটাইমেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের পোস্টিং, ‘এটাই কি ফিফার যে কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে সহজতম গোল?’
ফাইনালের আগে অবশ্য চিলির বায়ার্ন মিউনিখ তারকা ফরোয়ার্ড ভিদাল জার্মানিদের খোঁচা দিয়ে ব্লগে লিখেছিলেন, “কনফেড কাপ জিতলে প্রমাণ হয়ে যাবে আমরাই বিশ্বের এক নম্বর ফুটবল দেশ।” ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা, জার্মানির পর চিলির চার নম্বরে থাকাটা পাত্তাই দিতে চাননি ভিদাল। বরং তাঁর পাল্টা যুক্তি, “আমরা ফাইনালে আর্জেন্তিনাকে হারিয়ে কোপা চ্যাম্পিয়ন। কনফেড কাপ ফাইনালে উঠেছি ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে হারিয়ে। আর আজ কনফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হলে সেটা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে হব।” বাস্তবে অবশ্য চিলি দ্বিতীয় গোলও খেতে পারত। দ্বিতীয়ার্ধে গোরেৎজকা, যাঁকে কেউ কেউ নতুন লোথার ম্যাথেউজ বলে মনে করছেন, তাঁর প্রচণ্ড জোরাল মাটি ঘেঁষা শট ব্রাভোকে পরাস্ত করেও অল্পের জন্য বাইরে যায়। চিলির আসলে ফাইনালে দিনই ছিল না। নইলে কী আর ব্রাভোকে ‘প্যানিকড’ দেখায় গোলের নিচে! আর তাঁদের প্রধান স্কোরার সাঞ্চেজকে ফাইনালে বোতলবন্দি করে রেখেছিলেন তাঁরই আর্সেনাল টিমমেট মুস্তাফি। সেমিফাইনালের দল থেকে ফাইনালে একটাই পরিবর্তন করেছিল জার্মানি। বিপক্ষের রাইট উইং সাঞ্চেজকে রুখতে রাইট ব্যাকে শোকোদ্রান মুস্তাফি। লো—র এদিনের মাস্টারস্ট্রোক!
[ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে লজ্জার হার বিরাটদের]
The post কোপা চ্যাম্পিয়ন চিলিকে হারিয়ে কনফেড কাপ ঘরে তুলল জার্মানি appeared first on Sangbad Pratidin.