সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন স্পষ্ট জোট বার্তা। রাজ্য নেতারা বারবার বলছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট কোনওভাবেই নয়। কিন্তু, কেন্দ্রীয় নেতারা কী আদৌ সেকথা শুনছেন? ব্রিগেডের সভায় অভিষেক মনু সিংভির বক্তব্যের পর আবারও সেই প্রশ্নটি মাথাচাড়া দিল। এরাজ্য থেকেই মমতার সমর্থনে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ। তাঁর কথাবার্তাতে তাই মমতার প্রশংসা শোনা যাওয়াটা হয়তো স্বাভাবিক ছিল। স্থানীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কথা ভেবে তিনি হয়তো মমতার প্রশংসায় রাশ টানতে পারেন, এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু তেমনটা হল না, বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করতে মমতার যে পরিশ্রম তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাহুল গান্ধীর দূত। একই কথা বললেন মল্লিকার্জুন খাড়গেও। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে একজোট হতে হবে, এটাই ছিল খাড়গের বক্তব্যের মূল বার্তা। তিনি বলেন, মন না চাইলেও আমাদের হাত মিলিয়ে চলতে হবে।অন্যদিকে, খাড়গের মাধ্যমে এই জনসভাকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন সোনিয়া গান্ধীও। ইউপিএ চেয়ারপার্সনের বার্তা,” কৃষকদের সংকট বাড়ছে। দেশ অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে সমস্যায়। গণতন্ত্রে ভরসা ফেরাতে আমি মোদির বিরুদ্ধে এই লড়াইকে শুভেচ্ছা জানায়।”
[ব্রিগেড সমাবেশ ঘিরে যান নিয়ন্ত্রণ, জেনে নিন কোন কোন রাস্তা বন্ধ]
মঞ্চে ২২টি বিরোধী দলের নেতাদের সাক্ষী রেখে কংগ্রেস নেতা বললেন, “মেঘ সরছে, রামধনু তৈরি হচ্ছে। আমাদের রং আলাদা হতে পারে, কিন্তু আলাদা আলাদা রং এক জায়গায় হয়েই রামধনু তৈরি হয়। একজোট বা মহাজোট যা ইচ্ছে বলতে পারেন। আজ এই রামধনুর সময় হয়েছে। এই মহান প্রচেষ্টার জন্য মমতাকে ধন্যবাদ। আমরা আগামী দিনে এক নতুন ভারত তৈরি করব, বিজেপিকে ভাগাব। জনতা কি ইয়েহি পুকার, আব নেহি চাহিয়ে মোদি সরকার। ৭০ বছরের এত প্রতিশোধের রাজনীতি এতদিন হয়নি। রথযাত্রার মাধ্যমে সস্তার রাজনীতি করছে বিজেপি। হিংসার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বারবার রথ নিয়ে রাজনীতি করছে, মানুষের যেন প্রাণের কোনও মূল্য এদের কাছে নেই।”
[যত্রতত্র মূত্রত্যাগ, মমতার স্বপ্নের শহরকে দূষিত করছেন তাঁরই অনুগামীরা]
সিংভির ভাষণের সুর পুরোপুরি বিজেপি বিরোধী হলেও, মমতার ভূয়সী প্রশংসাও যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিনের সভা থেকে সিংভি মমতার এক আসনে এক প্রার্থীর তত্ত্বকেও সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “ভোট বিভাজনের সুবিধা বিজেপিই পায়। এই রামধনুর মঞ্চ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বানিয়েছেন, তার মূল উদ্দেশ্য ভোট বিভাজনকে রুখে দেওয়া। যেখানেই বিভাজন হোক সেখানেই সুবিধা পাবে বিজেপি।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে মহাজোটে জায়গা না পাওয়ায় কংগ্রেসের টনক নড়েছে। তাই সব রাজ্যেই স্থানীয় হেভিওয়েটদের সঙ্গে জোটে যেতে চাইছেন রাহুল। এদিন রাহুলের দূত যে বার্তা দিলেন তাতেও হয়তো সূক্ষ জোট বার্তা রয়েছে। যদিও, এরাজ্যের জোট নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি অভিষেক মনু সিংভি। তবে, তাঁর মমতা বন্দনা যে সোমেন, অধীরদের রক্তচাপ বাড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।
The post বিজেপি বিরোধী ভোট বিভাজন রুখতে হবে, মমতার মঞ্চে বার্তা কংগ্রেস নেতার appeared first on Sangbad Pratidin.