বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে (Lakshmir Bhandar) অনুকরণ করে হিমাচল ও কর্নাটকে বাজিমাত করেছে কংগ্রেস। দুই রাজ্যই বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন দল। দুই রাজ্য জয়ের পিছনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুকরণে মহালক্ষ্মী প্রকল্প ভোটবাক্সে সফলতা এনে দিয়েছে বলেই মনে করে কংগ্রেস (Congress)। এবার তেলেঙ্গানা (Telengana) জয়ে সেই মহালক্ষ্মী প্রকল্পকেই অস্ত্র করার কথা ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী।
রবিবার দলের কংগ্রস কর্মসমিতির বৈঠকের শেষদিনে হায়দরাবাদে প্রকাশ্যে তিনি জানান, রাজ্যের মহিলাদের মাসে আড়াই হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে দক্ষিণের এই রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাস দেবে বলেও জানান সোনিয়া। এদিন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে পঞ্চবানে বিদ্ধ করেন সোনিয়া। মহিলাদের জন্য সরকারি বাসে বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান তিনি। তবে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন রাহুল গান্ধী। চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল বিআরএসকে বিজেপি রিস্তেদার কমিটি বলে কটাক্ষ করেন সোনিয়াতনয়। কর্মসমিতি বৈঠকের শেষদিনে ইন্ডিয়া জোটের প্রয়োজনীয়তার ব্যাখ্যা দেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
[আরও পড়ুন: ছুটি কাটাতে বাড়িতে ফিরেই বিপত্তি, অপহরণ করে খুন মণিপুরের সেনাকর্মীকে]
ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে দলের রণকৌশল স্থির করতে শনিবার ও রবিবার হায়দরাবাদে বৈঠকে বসে কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্ব। যেহেতু বছর ঘুরলেই দক্ষিণের এই রাজ্যে ভোট তাই বৈঠকের স্থান হিসাবে হায়দরাবাদকে বেছে নেন সোনিয়া, খাড়গে ও রাহুলরা। রবিবার বৈঠকের দ্বিতীয়দিনে রাজ্য সভাপতি ও কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতৃত্বকে ইন্ডিয়া জোটের প্রয়োজনীয়তার ব্যাখ্যা দেন দলের সভাপতি। জানান, প্রতিটি রাজ্যেই শরিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কংগ্রেসকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। যদি কোনও জটিলতা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে এআইসিসি পদক্ষেপ করবে। দিল্লি, পাঞ্জাব ও কেরলের মতো কয়েকটি রাজ্যে সমস্যা হতে পারে। শীর্ষ নেতৃত্ব সে ব্যাপারে আগাম ওয়াকিবহাল বলে ইঙ্গিত দেন খাড়গে।
অন্যদিকে, মহালক্ষ্মী প্রকল্পে মহিলাদের অনুদান দেওয়া, রান্নার গ্যাসে ছাড় ও সরকারি বাসে মহিলাদের বিনামূল্যে ভ্রমণের পাশাপাশি আরও দু’টি প্রকল্প ঘোষণা করেন সোনিয়া। আজ তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন হওয়ার পিছনে সোনিয়া গান্ধীর ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দেন রাহুল। জানান, রাজ্যের গরিব মানুষের কথা ভেবেই রাজ্য ভাগের সিদ্ধান্ত নেন সোনিয়া। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পরিবারের উন্নতির জন্য ব্যবহার করেছেন। তাই তিনমাস পরে বিধানসভা নির্বাচনে এই মুখ্যমন্ত্রীকে বিদায় দিতে হবে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে যাঁদের বাড়ি নেই সরকার তাঁদের পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেবে। প্রথম মন্ত্রীসভার বৈঠকেই প্রতিশ্রুতি পালনের সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস, জানান রাহুল।