শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: ভোটের দিন তিনেক আগে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ল কংগ্রেস! ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূল লিড পেলে নেড়া হবেন বলে চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন কংগ্রেস কর্মী জাভেদ আখতার। তবে তাঁর চ্যালেঞ্জকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। তাদের দাবি, রাজ্যজুড়ে উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়নের ছোঁয়ায় দক্ষিণ মালদহেও তৃণমূল প্রার্থী জয় পাবে।
২০১৯ লোকসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী জিতেছিলেন ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভার ভোটের লিডের উপর নির্ভর করে। ফলে উত্তরবঙ্গের গেরুয়া ঝড় থমকে গিয়েছিল দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রে। শনিবার দুপুরে সামশেরগঞ্জ বিধানসভার ধুলিয়ান পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হিজলতলার বাসিন্দা বছর উনচল্লিশের জাভেদ আখতার তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, "২০১৯ সালের লোকসভার পুনরাবৃওি ঘটতে চলেছে ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভায়। কংগ্রেস দুই বিধানসভায় লিড দেবে। তৃণমূলের ক্ষমতা থাকলে দক্ষিণ মালদহ লোকসভার এই দুই কেন্দ্রে লিড দিয়ে দেখাক। তৃণমূল লিড নিতে পারলে মাথার চুল কেটে ফেলে নেড়া হয়ে যাব।রাজনীতি থেকে সরে যাবো।" নির্বাচনের ঠিক শেষলগ্নে সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান শহরের জাভেদ আখতারের এই চ্যালেঞ্জে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির।
[আরও পড়ুন: ৭০০ গাড়ি নিয়ে ব্রিজভূষণের পেশি প্রদর্শন! ভোটের বেসাতিতে চাপা পড়ল অ্যাথলিটদের কান্না?]
দক্ষিণ মালদহ লোকসভার মোট ভোটার ১৭, ৮১, ৪৫১ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮, ৯৯, ১৮৭, মহিলা ৮, ৮২, ২১৬ ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৪৮ জন। প্রায় ১০, ৮৯,০০০ হাজার মুসলিম ভোটার, হিন্দু ভোটার রয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ও আদিবাসী ভোটার আছে প্রায় ৯২ হাজার। ২০১৯-এর লোকসভায় কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৭০। শতাংশের হিসাবে ৩৪.৭৩। বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮ ভোট। ৩৪.০৯ শতাংশ। তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৫৩টি ভোট। শতাংশ ২৭.৪৭। ৮ হাজার ২২২ ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের ফরাক্কা বিধানসভার কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭৬ হাজার ১০৭ টি। বিজেপি পেয়েছিল ৪৬ হাজার ৮৮৬ ও তৃণমূল পেয়েছিল ৪৪ হাজার ৫২৮টি ভোট। কংগ্রেস প্রার্থীর লিড ছিল ২৯ হাজার ২২১টি ভোট।
অপরদিকে সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭৩ হাজার ৫৪, তৃণমূল পেয়েছিল ৬৫ হাজার ১১৫ ও বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৯ হাজার ৭১। কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ছিল ৪৩ হাজার ৯৮৩। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনে শহরকেন্দ্রিক ভোট বাদ দিয়ে ফরাক্কা ব্লকের তিনটি জেলা পরিষদের প্রাপ্ত ভোটে ফরাক্কা বাম- কংগ্রেস এগিয়ে আছে ১২ হাজার ৯৪৭ ভোটে।
[আরও পড়ুন: ‘আগে রায়বরেলিতে জিতুন, তার পর…’, আচমকাই কাসপারভের খোঁচা রাহুলকে!]
অন্যদিকে, সামশেরগঞ্জে বাম-কংগ্রেসকে পিছিয়ে ফেলে তৃণমূল এগিয়ে আছে ৮ হাজার ১৫২ ভোটের ব্যবধানে। এই বিধানসভার ধুলিয়ান পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস জিতেছে ৭, নির্দল ৪ ও তৃণমূল জিতেছিল ১০ ওয়ার্ডে। ধুলিয়ান পুরসভার ভোট নিয়ন্ত্রণ করে বিড়ি কারখানার মালিক গোষ্ঠী। ফলে এবারও কংগ্রেস ধুলিয়ান শহরে ভালো মার্জিনে এগিয়ে থাকবে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। যদিও রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহসভাপতি প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হকের দাবি, "সমীক্ষায় বিশ্বাস করি না। রাজ্য জুড়ে যে উন্নয়ন ঘটেছে তার নিরিখে এবার দক্ষিণ মালদহ লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হতে চলেছেন। তাঁর জয়ের মূল কারিগর মহিলা ভোটার। "