সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কটাক্ষ, কোন্দল, পালটা কটাক্ষ, যত কাণ্ড কংগ্রেসে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে লজ্জাজনক হারের পর কংগ্রেসের (Congress) যখন সংগঠনের খোলনলচে বদলানোর কথা, সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর কথা, তখন দেশের সবচেয়ে পুরনো দল ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে। তবে বুধবার সেই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি একেবারে খুল্লমখুল্লা পর্যায়ে পৌঁছে গেল।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া গান্ধীরা ইস্তফার ‘নাটক’ করার পর থেকেই ফুঁসছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। সোনিয়াকে সরিয়ে মুকুল ওয়াসনিককে কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা করার যে দাবি অস্ফুটে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, সেটাও হালে পানি পায়নি। তারপরই পালটা রণকৌশল তৈরির উদ্দেশে বুধবার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেন জি-২৩ নেতারা। কিন্তু এর মধ্যে আবার প্রকাশ্যে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিবিরের অন্যতম নেতা কপিল সিব্বল। তিনি বলে দেন, স্বেচ্ছায় কংগ্রেসের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত সোনিয়া গান্ধীদের (Sonia Gandhi)। তিনি চান, সব কি কংগ্রেস, ঘর কি কংগ্রেস নয়।
[আরও পড়ুন: ‘ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পড়াশোনা শেষ করার সুযোগ দিন’, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর]
প্রকাশ্যে সিব্বলের (Kapil Sibbal) এই মন্তব্য আমার বেকায়দায় ফেলে দেয় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে। প্রকাশ্যে সোনিয়ার বিরুদ্ধে এই মন্তব্য করায় গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠরা তো বটেই যারা কোনও শিবিরে ছিলেন না, তাঁরাও সিব্বলের বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করেন। অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) প্রকাশ্যে বলে দেন, সিব্বল কোথাকার কে? সোনিয়া গান্ধীকে কেউ দুর্বল করতে পারবেন না। কংগ্রেসের একদল কর্মী আবার সিব্বলকে গদ্দার বলে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াই যে G-23 গ্রুপের অন্দরেও কার্যত একঘরে হয়ে যেতে হয় সিব্বলকে। বুধবারের যে বৈঠক সিব্বলের বাড়িতে হওয়ার কথা ছিল সেটা শেষ মুহূর্তে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্ষুব্ধদের অনেকেই নাকি সিব্বলের বাড়িতে বৈঠকে যেতে চাইছিলেন না।
[আরও পড়ুন: ‘অসমে মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, সম্প্রীতি রক্ষার দায়িত্ব তাদেরই’, হিমন্তের মন্তব্যে শোরগোল]
অর্থাৎ, জি-২৩ গ্রুপের অন্দরেই তৈরি হয়েছে বিভেদ। যদিও, গুলাম নবি আজদের বাড়িতে এদিনের বৈঠকে সিব্বল হাজির ছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনের বৈঠকে যোগ দেন শশী থারুর। কংগ্রেসের সিনিয়র এই সাংসদ এতদিন G-23 গ্রুপের সদস্য হিসাবে পরিচিত ছিলেন না। এদিনের বৈঠকে অন্যান্য যারা হাজির ছিলেন, তাঁরা হলেন কপিল সিব্বল, শশী থারুর, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, ভুপেন্দ্র সিং হুদা, অখিলেশ প্রসাদ সিং, পৃথ্বীরাজ চৌহান, রাজ বব্বর, পিজে কুরিয়েন, মণিশংকর আইয়ার, সন্দীপ দীক্ষিতরা। বৈঠক শেষে ঠিক হয়, নিজেদের বক্তব্য জানাতে বৃহস্পতিবারই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করবেন গুলাম নবি আজাদ। বৈঠকে থাকতে পারেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কাও।