রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। আগামী ৮ জুলাই একদফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। আচমকা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার বিরোধিতায় সরব একাধিক রাজনৈতিক দল। অশান্তির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানানো হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর দাবি অবশ্য অন্যরকম। পঞ্চায়েত ভোট নির্বিঘ্নে হবে, এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হলফনামা জমা দিতে হবে বলেই দাবি তাঁর।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি শেষ হলে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে বলেই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল। যদিও বাস্তবে তা হয়নি। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি শেষ হওয়ার সপ্তাহখানেক আগেই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার নেপথ্যে শাসকদলের মদত রয়েছে বলেই মনে করছেন অধীর। নাম না করে অভিষেককে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ভোট হওয়া উচিত। তা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটের নামে একটা প্রহসন হয়। আমরা বারবার বলি রাজ্যে ভোট কমিশনের অধীনে হতে পারে না। সরকার জানে না।
কিন্তু খোকাবাবু জানেন তাই বলেছিলেন নবজোয়ার শেষে হবে। এখানে কমিশনার যে অদক্ষ তার প্রমাণ নিজেই দিচ্ছেন। যেভাবে ভোট ঘোষণা হল তাতেই সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য স্পষ্ট। যাতে বিরোধীরা সুযোগ না পায় তাই এত তাড়াহুড়ো। আমরা বিরোধী দল। তাই আমাদের প্রস্তুতির সময় লাগে।”
[আরও পড়ুন: Panchayat Election: প্রার্থী দিতে না পারলে বাম-কংগ্রেসকে সমর্থন! ভোট ঘোষণার পরই জেলাস্তরে কৌশল বিজেপির]
মনোনয়ন জমার সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে শাসকদলকে একহাত নেন অধীর। তিনি বলেন, “আগামী ১৫ জুন শহিদ মিনারে কংগ্রেস। ওইদিন মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হলে আমরা সমাবেশ স্থগিত রাখব। সভা যাতে ধাক্কা খায় তাই এই ব্যবস্থা। সরকারি কর্মচারীদের এত কীসের তাড়া? এত তাড়াতাড়ি কেন শেষ হবে মনোনয়ন? ৩টে কেন? রাত পর্যন্ত চলতে পারত। সময় কমিয়ে মানুষের উপরের আঘাত করা হল। মানুষ যাতে সময় সংকটে ভোগে তার ব্যবস্থা করা হল। তৃণমূল যেনতেন প্রকারেণ পঞ্চায়েত দখল করার জন্য এই ঘোষণা করল।”
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ হবে না বলেই আশঙ্কা অধীরের। তিনি জানান, “আমরা ভোট চাই। সবসময় চাই। কিন্তু সময় চাই। এখনও কমিশনের কাছে সুযোগ আছে। আমরা সরকার ও কমিশনের কাছে আবেদন করছি। শান্তিতে ভোট করব। এই মর্মে হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিন মুখ্যমন্ত্রী।” প্রয়োজনে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোট করে ‘সাগরদিঘি মডেলে’ ভোট করবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন অধীর। রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় সুর চড়াতে গিয়ে অশালীন ভাষাও প্রয়োগ করতেও দেখা গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে।