সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণী অভিনেত্রী নাগমা মোরারজি বরাবরই সাহসী। পর্দায় হোক কিংবা রাজনীতির ময়দানে, সপাট জবাব দিতে তিনি কখনওই পিছপা হন না। প্রেম-সম্পর্ক থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, বির্তকের ঘেরাটোপে বহুবার খবরের শিরোনামে এসেছে। তবে এবার রাজনীতির ময়দান নিয়ে অকপট কংগ্রেস নেত্রী নাগমা। রাখঢাক না করে এক্কেবারে সোজাসুজি বাক্যবাণ চালালেন ভারতের রাজনৈতিক ময়দানে মহিলাদের অবস্থান নিয়ে। বিঁধলেন পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোকে।
[আরও পড়ুন : ছবি মুক্তিতে না কেন? জানতে চেয়ে কমিশনে চিঠি ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’র]
“ভারতীয় রাজনীতিতে মহিলারা হলেন গিনিপিগ”-এমনটাই মন্তব্য করলেন অভিনেত্রী তথা রাজনীতিবিদ নাগমা। “এদেশে রাজনীতির ময়দানে নামাটা একজন মহিলার পক্ষে যথেষ্ট কঠিন। সমাজের মতো এদেশের রাজনৈতিক কাঠামোতেও পুরুষতান্ত্রিক বেড়াজালে পড়তে হয় মহিলাদের। রাজনীতিতে সাফল্য পেতে হলে কোনও না কোনও লবিতে নাম লেখাতেই মহিলাদের। যেন এটাই নিয়ম হয়ে গিয়েছে। পুরুষদের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই চালানোটাও বেশ কঠিন। হাজার-কোটি টাকার বাজি ধরা থাকে এখানে। সবই টাকার খেলা।” বিস্ফোরক নাগমার কাছে শোনা গেল এমনটাই।
পাশাপাশি অভিনেত্রী এও বলেন যে, “তাছাড়া যেসব মহিলারা স্পষ্টবক্তা এবং বুদ্ধিমতী, পুরুষরা কিন্তু তাঁদের বেশ ভয় পান। আর সেই মহিলা যদি স্বাধীনচেতা মনস্ক এবং সিঙ্গল হন, তাহলে তো কথাই নেই, তাঁদের ভয় আরও বেড়ে দাঁড়ায়। একটা মহিলা কোনও লবিতে যোগ দিলেই হল, চারদিক যেন ভ্রুকুটিতে ছেয়ে যায়। সে যতই কাজ করুক পার্টিতে তাঁকে কেউ মানতেই চায় না। নির্বাচনে লড়ার জন্য টিকিট পাওয়ার প্রক্রিয়াও খুব জটিল। দলের নেতারা সবসময়ে লিঙ্গবৈষম্যের কথা বলতে থাকেন। কোথায় ভোটপ্রার্থী নির্বাচনের সময়ে তো বাস্তবে সেসব কোনও কিছুই চোখে পড়ে না! পার্টির লোকেরা মনে করেন, কোনও মহিলা রাজনৈতিক পরিবার থেকে না আসলে তাঁর পক্ষে রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকা এবং নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা প্রায় থাকেই না।”
[আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন অক্ষয়?]
“এই দেখুন না, কোনও মহিলাকে টিকিট দিয়ে ভোটপ্রার্থী করলেও, তাঁকে এমন কেন্দ্র থেকে দাঁড় করানো হয়, যেখানে জেতার সম্ভাবনা কম। কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী পার্টির প্রার্থী দুর্বল, যার হার নিশ্চিত ওই আসন থেকে। আর মহিলারা প্রায়ই সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে থাকেন। আমিও নিয়েছি। ২০১৪ সালে মীরাট থেকে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। জানতাম, ওই আসনে আরএসএসের প্রভাব বেশি। আমার বিপরীতে ভিএইচপি এবং বজরং দলের প্রার্থীদেরও প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জায়গাটা পোক্ত ছিল। আমি কিন্তু সেখান থেকেই দাঁড়িয়েছিলাম। কোনও পুরুষ ভোটপ্রার্থী কি এরকম কোনও আসন থেকে দাঁড়ানোর সাহস করবেন? স্বয়ং নরেন্দ্র মোদিও কি এরকম কোনও জায়গা থেকে লড়বেন যেখানে বিজেপির কর্মী কম? আমিও আগে এরকম চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। পরে বুঝেছি সেসব বোকামো ছিল। তাই এবার আর ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। এখন আমি শুধু দলের হয়েই কাজ করতে চাই।” বলেন নাগমা।
পাশাপাশি, দেশের মহিলা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কথা উল্লেখ করে তাঁদের রাজনৈতিক জীবনে সাফল্যের কথাও বলেন তিনি। “মায়াবতী, মমতা, জয়ললিতাকেই দেখুন। এঁরা নিজেরাই চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেদের রাস্তা তৈরি করেছেন,” জানান অভিনেত্রী তথা কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ এবং সংশ্লিষ্ট দলের সক্রিয় সদস্য নাগমা। আপাতত তিনি দলে নিজের জায়গা পোক্ত করার কাজে মন দিয়েছেন। অপেক্ষায় আছেন কবে তাঁর সুসময় আসবে। এপ্রসঙ্গে তিনি ফিল্মি স্টাইলে বললেন, “আপনা টাইম আয়েগা।”
The post ‘ভারতীয় রাজনীতিতে মহিলারা গিনিপিগ’, বিতর্কিত মন্তব্য নাগমার appeared first on Sangbad Pratidin.