স্টাফ রিপোর্টার: এবার প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম এক মুখপাত্রর কার্যত তোপের মুখে পড়লেন ‘অপরাজিত’ (Aparajito) ছবির পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta)। ‘বিষয় পথের পাঁচালী’র বিতর্কের মাঝেই অন্য বিতর্ক শুরু হল। কংগ্রেস নেতা অশোক ভট্টাচার্য (রাজা) ক’দিন আগেই ফেসবুকে ‘ইতিহাস ও সিনেমা : বিধান রায় অপরাজিত’ শীর্ষক লেখায় স্পষ্টই লিখেছেন, “একটা প্রায় ঘোষিত ‘ইতিহাস আশ্রিত’ সিনেমায় ইতিহাস থেকে বিচ্যুত হওয়া কেবল ভুল নয়, অপরাধ। ফলত প্রশ্ন উঠলে তখন আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি হয়েছে ; শিল্পের দোহাই দিয়ে ‘বিধান রায়’ নয়, সিনেমার চরিত্র ‘বিমান রায়’কেই দেখতে হবে–এমন যুক্তি নেহাতই জোলো।” বস্তুত, অপরাজিত সিনেমায় বিধান রায়ের চরিত্রের সঙ্গে বিমান রায়ের মিল রয়েছে, সেটা অনেকেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু চরিত্রের বিমান রায়ের কার্যকলাপ ইতিহাসের বিধান রায়ের সেই সময়ের কার্যকলাপের সঙ্গে মিলছে না বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। এইসব প্রকারান্তরে উল্লেখ করেই অশোক প্রশ্ন তুলেছেন, আগে ঠিক করে নিন, অনীক দত্তের ‘অপরাজিত’ নিছক সিনেমা? না কি ইতিহাস আশ্রিত একটা দলিলের চিত্রায়ণ? কোনটা?
[আরও পড়ুন: অনীকের ‘অপরাজিত’র ১০ বছর আগেই ‘বিষয় পথের পাঁচালী’ তৈরির প্ল্যান, ট্রেলার প্রকাশ্যে এনে দাবি পরিচালকের]
অনীক বরাবরই বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী। সেই দিক থেকে দেখলে, কংগ্রেসের এক নেতার দিক থেকে ‘তির্যক’ মন্তব্য ইঙ্গিতবাহী হতে পারে। মূলত বিধান রায়ের বিষয়ে কোনও ইতিহাস-বিকৃতি মেনে নেওয়া হবে না বলে আগেই জানিয়েছেন কিছু কংগ্রেস কর্মী। বিধান রায়ের স্মৃতিশক্তি ও মেধার প্রসঙ্গ টেনে অশোকও লিখেছেন, “বিভূতিবাবু তখন ইহলোকে নেই, এটা প্রখর স্মৃতিশক্তি ও মেধাসম্পন্ন বিধান রায়ের মনে ছিল না– এটা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য? আসলে এমন কথা বিধান রায় বলেননি।” এই প্রসঙ্গেই প্রদেশ কংগ্রেসের পত্রিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অশোক লিখেছেন, “হতেই পারে পরিচালক তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক ও জীবনদর্শনের অনুগামী হয়ে বিধান রায়কে দেখাতে চেয়েছেন। সে স্বাধীনতা তঁার আছে। পাল্টা প্রকৃত ইতিহাস মানুষের কাছে তুলে ধরার কাজ, সেটাও আমাদের দায়বদ্ধতা।” ‘বিষয় পথের পাঁচালী’ ছবিটি ২০১২ সালে নথিভুক্ত হয়। সেই ছবির শুটিং চলছে। ‘সাধু ব্রাদার্স এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন হাউস’-এর তরফে আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী দাবি করেন, অপরাজিতর প্রযোজকের সঙ্গেও তাঁর মক্কেলরা কথা বলেছিলেন যাতে ছবিটি শেষ করা যায়। কিন্তু, পরবর্তী ক্ষেত্রে দেখা যায় একই প্লট নিয়ে অপরাজিত বলে একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এর পরেই ছবির পরিচালক এবং প্রযোজককে একটি আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। প্রোডাকশন হাউস-এর তরফে আইনি নোটিসে অনীক দত্ত ও তাঁর প্রযোজনা সংস্থার কাছে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছে।