সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নিজেদের গায়ে আগুনের আঁচ লাগতেই বদলে গেল কংগ্রেসের (Congress) সুর। গণতন্ত্র বাঁচাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমমনস্ক নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রতিহিংসার প্রতিবাদ হবে একযোগে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২৪, আকবর রোড। সাম্প্রতিক সময়েও রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) নেতাদের যখন সমন পাঠিয়ে দিনের পর দিন ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তখন কটাক্ষ করতে ছাড়তেন না প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। আবার সেই নেতাদেরই রাহুল-সোনিয়া গান্ধীকে ইডি (ED)সমনের প্রতিবাদে পথে নামতে দেখা গিয়েছে। অদ্ভুত এই বৈপরীত্য নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
বক্তব্য, নিজেদের বেলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহারের তত্ত্ব খাড়া করা হলেও অন্যদের ক্ষেত্রে কেন ভিন্ন সুরে কথা বলেন কংগ্রেস নেতারা? রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর টনক নড়েছে। কংগ্রেস বুঝতে পেরেছে, তাদের একার পক্ষে বিজেপি বিরোধী জনমত তৈরি করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সমমনস্ক অন্যান্য দলকেও। বিশেষত, আঞ্চলিক দলগুলিকে (Regional Parties)। ঠিক হয়েছে, কিছুতেই ফাটল ধরতে দেওয়া যাবে না বিরোধী ঐক্যে। বৃহত্তর স্বার্থের প্রয়োজনে এড়িয়ে যেতে হবে ছোটখাটো মতবিরোধ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ (West Bengal) অন্যান্য প্রদেশেও এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে হাইকমান্ডের তরফে।
[আরও পড়ুন: জয়েন্ট পাশ না করেও ‘কোটা’য় ডাক্তারি! বাম আমলের তালিকা চাইলেন কুণাল]
গত শনিবার কংগ্রেস কর্মসমিতির সাধারণ সম্পাদক, সহ-সম্পাদক, বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এবং প্রদেশ সভাপতি-সহ অন্যান্য শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করেন সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল (KC Venugopal)। আগামী কয়েক সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মসূচি ঠিক করার পাশাপাশি আঞ্চলিক স্তরে সমমনস্ক দলের সঙ্গে যাতে কিছুতেই বিরোধের আবহ তৈরি না হয়, সেই বার্তাও বৈঠকে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: যৌন মিলনের পর নিজের স্ত্রীকে বন্ধুকে দিয়ে ‘ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত]
হরিয়ানার (Haryana) দায়িত্বপ্রাপ্ত শক্তিসিং গোহিল এই খবরের সত্যতায় সিলমোহর দিয়ে জানিয়েছেন, “বিরোধী দলগুলির ঐক্য শুধুই নির্বাচনের জন্য নয়। অন্যান্য সমস্যা দূর করতেও আমাদের এক হয়ে লড়তে হবে। তা কৃষক সমস্যা হোক বা পীড়িতদের উপর অত্যাচার। মূল্যবৃদ্ধি হোক বা বেকারত্ব। এমনকী, দেশের গণতন্ত্র বাঁচাতে সমমনস্ক নেতাদের যেখানে অকারণে বিব্রত করা হবে, সেখানেও আমাদের একযোগে প্রতিবাদ করতে হবে।” এবার স্থানীয় স্তরে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে শ্যামের পাশাপাশি প্রদেশ নেতারা কুল কীভাবে রক্ষা করেন, সেটাই এখন দেখার।