সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তিনি নেই। কিন্তু তিনি আছেন। তিনি যে ঝালদার পুর রাজনীতিতে না থেকেও প্রাসঙ্গিক। তাই তৃণমূল উপ-পুরপ্রধান সুদীপ কর্মকারের ডাকা সোমবারের তলবি সভায় শাসক দলের কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিতে বিরোধীদের অনাস্থার বৈঠক শেষ হতেই ফিরল নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্মৃতি। তিনি না থেকেও রয়ে গিয়েছেন ঝালদা পুর শহরের পথে-ঘাটে। পুর শহরের ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে। ঝালদার গলিতে-গলিতে। সোমবার তা যেন আরও একবার দেখল প্রান্তিক পুর শহর ঝালদা। বিরোধীদের বিজয় মিছিলে সামিল হয়ে তাঁর স্ত্রী বললেন, “ঝালদা দখলের এই দিনটা তো আগেও আসত। কিন্তু সেই দিন পরে এল।” শুধু আফশোস একটাই, “ক্ষমতা দখলের জন্য আমার স্বামীকে ওরা খুন করল।”
শাসকদলের পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার খুশিতে ঝালদা পুর শহরের রাস্তায় নামেন কংগ্রেস কাউন্সিলররা। তাঁদের সঙ্গে পা মেলালেন আমজনতাও। তাঁদের সঙ্গেই বড় বড় কার্টুন আর প্ল্যাকার্ডে ছিলেন নিহত তপন কান্দু। চোখের জলে নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী ঝালদা শহরের পথে এদিন মিছিলে হাঁটলেও গলায় মালা পড়লেন না তিনি।
[আরও পড়ুন: এবার হোয়াটসঅ্যাপের ডেস্কটপ ভার্সানেও দেওয়া যাবে পাসওয়ার্ড, কীভাবে কাজ করবে এই ফিচার?]
মালা হাতে নিয়েই চোখের জলে বলেন , “ঝালদা দখলের এই দিনটা তো আগেও আসত। কিন্তু সেই দিন পরে এল। ক্ষমতা দখলের জন্য আমার স্বামীকে ওরা খুন করল। কিন্তু খুশির দিনটা এল। তবে আজ উনি নেই। কিন্তু ঝালদার মানুষ তাকে মনে রেখেছেন। তাই ঝালদার রাজপথের মিছিলে, আড্ডায়, ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে তিনি আছেন।”
গত ১৩ মার্চ কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হন। এই অনাস্থায় জিততে কংগ্রেসের পক্ষে থাকা কাউন্সিলররা বেশ কিছুদিন ধরে গোপন শিবিরে ছিলেন। এদিন সেই গোপন শিবির থেকে তাঁরা নিহত তপন কান্দুর বাড়ি আসেন। সেখান থেকেই সাত কাউন্সিলর অর্থাৎ অনাস্থা আনা কংগ্রেসের পাঁচ ও তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া নির্দলের এক কাউন্সিলর এবং তৃণমূলের সঙ্গত্যাগ করা নির্দল প্রতীকে জেতা কাউন্সিলর একসঙ্গে তপন কান্দুর ছবিতে প্রণাম করে ঝালদা পুরভবনে ঢুকেছিলেন। সবে মিলে অনাস্থার তলবি সভার পর তপন কান্দুতেই যেন আচ্ছন্ন রইল ঝালদা পুরশহর।