শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: এবার ‘বেসুরো’ রায়গঞ্জের (Raiganj) বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। সাংবাদিক বৈঠক থেকে ক্ষোভ উগরে দিলেন উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি সভাপতি থেকে শুরু করে রায়গঞ্জের সাংসদের বিরুদ্ধে। সাফ জানালেন, দলের কোনও কাজেই আর থাকবেন না তিনি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, দ্রুতই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বিধায়ক।
রবিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। সেখানেই জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। নাম না করে তোপ দাগেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকেও। বলেন, “এখানকার সাংসদ কখন আসেন, কখন যান আমরা কিছুই জানি না। এলাকার মানুষ প্রয়োজনে তাঁর দেখা পান না।” কৃষ্ণবাবু দাবি করেন, তিনি এবিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। তারা সুরাহার আশ্বাস দিলেও কোনও ফল মেলেনি। এমনকী উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের নিয়ে শিলিগুড়ির বৈঠকেও নাকি নিজের অভিযোগ জানিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী।
[আরও পড়ুন: স্রেফ চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীনকে বেধড়ক মার, চূড়ান্ত অমানবিকতার সাক্ষী মালদহ]
এরপরই রবিবার দলের সমস্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। এদিন তিনি বলেন, “আমার অন্তরাত্মা বলেছে যে সাংবাদিক বৈঠক করে সব জানানো প্রয়োজন তাই বলছি। যেখানে বিধায়কের সম্মান নেই, সেখান থেকে সরে যাওয়াই ভাল। বাসুদেববাবু বলেছিলেন, বাঁশি ওঁর হাতে। উনি বাঁশি বাজিয়ে সংগঠন চাঙা করুন, আমি বিধায়ক হিসেবে দলের কাজ করব।” দলের কাজ থেকে সরানোর পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনাও উসকে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। বাসুদেব সরকারকে সরানো হলে কি দলে সক্রিয় হবেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, “যদি বলে কোনও কথা রাজনীতিতে হয় না।” ওয়াকিবহল মহলের ধারণা, কৃষ্ণ কল্যাণীর তৃণমূলে যোগ সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
আক্রমণের পালটা উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, “আদর্শগতভাবে দল করছি। দলের কোনও বিষয়ে মতবিরোধ হলে তা সরাসরি বলাই ভাল। তা না করে সাংবাদিক বৈঠক করা হলে দলেরই ক্ষতি।” দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, তাঁর কাজের এলাকা যথেষ্ট বড়। তাই শুধু মাত্র রায়গঞ্জে থাকা তার পক্ষে কখনই সম্ভব নয়।
কিন্তু এই দলবদলের জল্পনা নিয়ে কী বলছে তৃণমূল? জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালের কথায়, “শনিবারই সৌমেন রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কৃষ্ণ কল্যাণীও আসবেন।” যদিও বিজেপি নেতা দাবি করেছেন তাঁর সঙ্গে এখনও কোনও তৃণমূল নেতার সঙ্গে কথা হয়নি।