বিক্রম রায়, কোচবিহার: দীর্ঘদিন ধরে বেহাল মাথাভাঙা-শীতলকুচি সড়ক। অভিযোগ, একাধিকবার অবরোধ করেও আশ্বাস ছাড়া আর কিছু মেলেনি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই রাস্তার কাজের শিলান্যাস পর্যন্ত করেছেন। তবু শুরু হয়নি প্রায় ১৮ কিলোমিটারের এই রাস্তার সংস্কার কাজ। আশ্বাসের পরেও রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় অভিনব প্রতিবাদ করলেন বেসরকারি যাত্রী পরিবহণ মোটর কর্মী ইউনিয়ন এবং ওই রুটের নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের পক্ষ থেকে রীতিমতো পূর্ত দপ্তরের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা হয়।
বুধবার ধরলা নদীর উপর তৈরি উপেন বর্মন সেতুর উপর পূর্ত দফতরের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই প্রতীকী শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য রাস্তায় চারটি কলা গাছ পুঁতে দেওয়া হয়। ডেকে আনা হয় পুরোহিত। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির জেরে সকাল ১০টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিল ওই রুটের যান চলাচল। শেষ পর্যন্ত ফের পূর্তদপ্তরের কর্তাদের পক্ষ থেকে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেন।
[আরও পড়ুন: বুদ্ধবাবুর আশ্বাসের পর ১১ বছর পার, চাকরি না মেলায় নবান্নের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের]
এই বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে পূর্তদপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু দাসগুপ্ত বলেন, “ওই রাস্তার কাজ শুরু করার জন্য একাধিক বার টেন্ডার ডাকা হয়েছিল তবে বিভিন্ন কারণে সেটা সফল হচ্ছিল না। তৃতীয়বার টেন্ডার প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। এই কাজের জন্য প্রায় ২৮ কোটি টাকা খরচ হবে। খুব শীঘ্রই এই কাজের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে কাজ শুরু করা হবে।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যে নতুন প্রকল্প ‘রাস্তাশ্রী’, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কাজ হবে সাড়ে ১১ হাজার কিমি রাস্তার]
প্রতিদিন বেহাল রাস্তার কারণে দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে গাড়ি। যে সেতুর উপর তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সেটা দুর্বল সেতু হিসেবে ঘোষণা করেছে পূর্তদপ্তর। কাজেই কোনও পণ্যবাহী গাড়ি সেখানে যেতে পারছে না। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন শীতলকুচির বাসিন্দারা। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা এদিন এই ধরনের কর্মসূচি করে। তার পরও যদি কাজ শুরু না হয় তাহলে আরও বড় ধরনের আন্দোলন করতে বাধ্য হবেন তাঁরা। কোচবিহার জেলা বেসরকারি যাত্রী পরিবহন মোটর কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি আলিজার রহমান বলেন, “রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে পরিবহণ কর্মীদের সঙ্গে সকলে মিলে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি করে। বেহাল রাস্তা সংস্কারের জন্য বারবার পূর্তদপ্তর আশ্বাস দিলেও কাজ তারা শুরু করতে পারছে না।”