বিক্রম রায়, কোচবিহার: খাঁচায় বন্দি রেখে পোষ মানাতে দেখা যায় পাখি অথবা জন্তুকে। যদি কোনও মানুষকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয় দিনরাত! অবাক হচ্ছেন? অমানবিক ঠেকছে? কোচবিহারের (Cooch Behar) মাথাভাঙ্গার বড়াইবাড়ি এলাকায় এমনই ঘটনা সামনে এসেছে। বছরের পর বছর খাঁচাবন্দি হয়ে দিন কাটছিল ১৬ বছর বয়সী ঝিলিক বর্মনের। এই খবর পাওয়ামাত্রই কিশোরীর বাড়িতে গেলেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh)। কথা বললেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। আশ্বাস দিলেন পাশে থাকার।
ঝিলিক বর্মন মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। হাঁটতে পারে না। পরিবারের সাধ্য নেই চিকিৎসা করানোর। কাজেই একটি কাঠের খাঁচায় জীবন কাটছিল ঝিলিকের। ঘটনাটি সামনে আসতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বুধবার মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের বিডিও উজ্জ্বল সরকার, ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র গায়েন ঘটনাস্থলে যান। কিশোরীকে খাঁচামুক্ত করেন এবং পরিবারকে যথাসম্ভব সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৃহস্পতিবার ওই কিশোরীর বাড়িতে বসে রাজ্যের প্রাক্তনমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আমাদের সরকার এই পরিবারের পাশে থাকবে। বহরমপুরে এই রোগের চিকিৎসা হয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি ওরা রাজি। এছাড়া মাসে ৩ হাজার ভাতা শীঘ্রই পাবে ওই পরিবার। খাদ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিবন্ধী ভাতার বিষয়ে ডিএম সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। একটা ঘর যাতে দেওয়া যায় সেটাও চেষ্টা করা হচ্ছে।” প্রাক্তনমন্ত্রীদের পাশে পেয়ে আপ্লুত কিশোরীর মা।
[আরও পড়ুন: আয়ার ‘মারে’ সরকারি হাসপাতালে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ, দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের]
উল্লেখ্য, ঝিলিকের মা সুচিত্রা বর্মন জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে জন্ম থেকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। নির্দিষ্ট সময় হাঁটা চলা শুরু না করায় কোচবিহারে চিকিৎসককে দেখানো হয়েছিল। কোনও লাভ হয়নি। এরপর ধারে টাকা নিয়ে চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরুতে যান। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন কয়েকটি অপারেশন করতে হবে। তবে ঝিলিক স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে কিনা বলা মুশকিল। চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই তারা ফিরে আসেন। মেয়ে ঝিলিক যাতে পড়ে না যায়, অঘটন না ঘটে সেজন্যই কাঠের খাঁচায় রাখা হত তাকে।