বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দশ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে সন্দেহ ছিল। কিন্তু তার জেরে কন্যাকে খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়ে ফেলল পুলিশকর্মী। পরে সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। নদিয়ার (Nadia) চাকদহের এই ঘটনা শুনে শিউড়ে উঠছেন সকলে। মেয়েকে খুন করে পুলিশকর্মীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় তার স্ত্রীকে আটক করেছে চাকদহ থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে গাংনাপুরের মৌসুমী সর্দারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল চাকদহের (Chakdah) বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত সর্দারের। পেশায় জয়ন্ত একজন পুলিশ। জিআরপি-র (GRP) অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে বেলঘরিয়ায় কাজ করছিলেন তিনি। জয়ন্ত-মৌসুমীর সাত বছরের এক মেয়েও রয়েছে, তার নাম জিয়া। দূরসম্পর্কিত এক বউদির সঙ্গে জয়ন্তর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ ছিল তাঁর স্ত্রী মৌসুমীর। উলটোদিকে, স্ত্রীকেও সন্দেহ করত জয়ন্ত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত প্রায়ই।
[আরও পড়ুন: ঘোর কলি! মাটি থেকে আকাশমুখী বজ্রের ঝলকানি! মুহূর্তে ভাইরাল ভিডিও]
শুক্রবার দুপুরে জয়ন্ত সর্দার বেলঘরিয়া থেকে চাকদহে নিজের বাড়িতে ফিরে দেখে, স্ত্রী ঘরে নেই। কোথায় গিয়েছেন, তা জানতে চায় বাড়ির লোকেদের কাছে। জানতে পারে, তিনি চাকদহ স্টেশনের কাছে চৈত্রসেলের বাজার করতে গিয়েছেন। এরপর খাওয়াদাওয়া না করে জয়ন্ত ঘরে ঢুকে যান। পরিবারের সদস্যদের বলেন, ”তোমরা খেয়ে নাও, আমি একটু পরে খাব৷” এরই মধ্যে জয়ন্তর বউদি মোবাইলে ফেসবুক (Facebook) ঘাঁটতে ঘাঁটতে দেখেন, জয়ন্ত তার মেয়েকে নিয়ে ফেসবুকে বলতে শোনেন, ‘সরি সরি’ ৷
[আরও পড়ুন: ফাঁস প্রধানমন্ত্রী মোদিকে হত্যার ছক, তদন্তে NIA]
ফেসবুকে দেখা মাত্রই বউদির সন্দেহ হয়। তড়িঘড়ি দাদা-বৌদি বাড়িতে কর্মরত রংমিস্ত্রি সবাই মিলে ডাকাডাকি করেন। কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় জয়ন্তর ঘরের দরজা ভাঙতে শুরু করে। ঘর থেকে পরে বাবা-মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। চাকদহ থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে। প্রাথমিক অনুমান, ঘরে ঢুকে প্রথমে মেয়ে জিয়ার গলায় ফাঁস দেয় জয়ন্ত। পরে সেই দড়িরই অন্যপ্রান্তে নিজের গলায় ফাঁস লাগায়। আটক করা হয়েছে জয়ন্ত সর্দারের স্ত্রী মৌসুমীকে। ঠিক কী কারণে জয়ন্তর এই পদক্ষেপ, তাকে জেরা করে বিস্তারিত জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা।