অর্ণব আইচ: আর কোনও ঝুঁকি নয়। শহরের কোন গুদামে রাখা হচ্ছে বাজি? দুর্গাপুজো শেষ হতে না হতেই সেদিকে নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। আর কয়েক সপ্তাহ দু’য়েক পরই কালীপুজো ও দীপাবলি। তাই নিষিদ্ধ শব্দবাজি ও চিনা বাজির উপর নজর রয়েছে পুলিশের।
[মুঘলসরাই, এলাহাবাদের পর এবার ফৈজাবাদের নাম বদলের প্রস্তাব বিশ্ব হিন্দু পরিষদের]
বাগরি মার্কেটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পর আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় পুলিশ। এমনিতেই বড়বাজার, হেয়ার স্ট্রিট, পোস্তা ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলির গুদামগুলিতে যে দাহ্য বস্তু রাখা হয়, সেই বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত। বাগরি মার্কেটে আগুন লাগার পর ফরেনসিক রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল। দুর্গাপুজোর পর থেকে কলকাতায় ঢুকতে শুরু করে বাজি। পুলিশের কাছে খবর, এই সময় শহরের বেশ কয়েকটি গুদামে বাজি মজুত করে রাখা হয়। আর তাতেই থাকছে ঝুঁকির প্রশ্ন। বড়বাজার ও তার সংলগ্ন এলাকার বহু গুদাম ও বাণিজ্যিক বাড়িতে যে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই, তা-ও প্রমাণিত। সেই ক্ষেত্রে গুদামগুলিতে বাজি জমিয়ে রাখলে তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ, বাগরির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, একবার আগুন ধরার পর সুগন্ধি, প্লাস্টিকের প্রচুর জিনিসপত্র দোকান ও গুদামে থাকার ফলে আগুন সহজে নেভেনি। সেই ক্ষেত্রে যদি গুদামের ভিতর বাজির সম্ভার থাকে, তার ফল আরও মারাত্মক হতে পারে।
জানা গিয়েছে, বড়বাজার অঞ্চলে অনেকেই গুদাম ভাড়া দেন। বহু ব্যবসায়ী মাসিক চুক্তিতে সেই গুদামে নিজেদের মাল রাখেন। কী ধরনের মাল বস্তাবন্দি করে গুদামে ব্যবসায়ীরা রাখছেন, সেই বিষয়ে গুদামের মালিকরা খোঁজখবরও রাখেন না। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায়, বস্তার পাশে বসে মালবাহকরা ধূমপান করেন। আবার বহু গুদামেরই বৈদ্যুতিক তারের এমন অবস্থা, যে কোনও সময়ই হতে পারে শর্ট সার্কিট। অথচ বেশিরভাগ গুদামেই রাখা হয় না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। কিন্তু যে ব্যবসায়ীদের কাছে বাজি আমদানির লাইসেন্স রয়েছে, তাঁরা বাজি নিয়ে এসে এমনভাবে তা গুদামে রাখতে পারেন, যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটতে পারে। সেই ক্ষেত্রে যে কোনও গুদাম বা দোকানে বাজি রাখলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই যে কোনও গুদামে যাতে লুকিয়ে বাজি না রাখা হয়, সেই বিষয়ে পুলিশ নজরদারি করছে।
একই সঙ্গে পুলিশের নজর রয়েছে নিষিদ্ধ চিনা বাজি ও শব্দবাজির উপর। পুলিশ জানিয়েছে, দূষণের কারণে চিনা বাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী আতসবাজির আড়ালেই চিনা বাজি পাচার করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এমনকী, এমনও দেখা গিয়েছে ‘নিরীহ’ আতসবাজির বাক্স চাপিয়ে তার ভিতর বিক্রি হচ্ছে চিনা বাজি। আবার কম দামী চিনা বাজির লেবেল ছিঁড়ে ফেলে আতসবাজির লেবেল লাগিয়ে তা চড়া দামে বিক্রি করা হয়েছে, এমন অভিযোগও উঠেছে।
এবার দুর্গাপুজোর পর থেকেই পুলিশের কড়া নজর রয়েছে চিনা বাজি পাচারের দিকেও। পুজোর আগেই উত্তর বন্দর এলাকা-সহ কয়েকটি জায়গা থেকে প্রচুর শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, দীপাবলির আগে শহরে আরও শব্দবাজি পাচারের চেষ্টা হতে পারে। তাই শহরের মালবাহী গাড়িগুলির দিকে নজরদারি শুরু হচ্ছে। অন্যান্য জিনিসপত্রের আড়ালে বা পরিবহণ সংস্থার গুদামে নিয়ে যাওয়ার নাম করে যাতে শহরে শব্দবাজি পাচার না হয়, সেই বিষয়ে এখন থেকেই কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘুর পথে ভিন রাজ্য থেকে যাতে বাজি রাজে্য না ঢুকতে পারে তার দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের। সব মিলিয়ে সতর্কতা রাজ্যজুড়ে।
[কার্নিভালে আসবেন রেকর্ড বিদেশি, দূষণ-নিয়ন্ত্রণে সতর্ক পুলিশ ও পুরসভা]
The post শহরের কোন গুদামে কত বাজি, নজরদারি শুরু পুলিশের appeared first on Sangbad Pratidin.